নুসরাত হত্যা : ‘সাক্ষীদের হুমকি দেওয়া ঠেকাতে পুলিশ সতর্ক’
ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলার সাক্ষীরা যেন কোনো হুমকি বা চাপের মুখে না পড়ে সে ব্যাপারে পুলিশের বাড়তি সতর্ক দৃষ্টি আছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) প্রধান বনজ কুমার মজুমদার।
আজ শনিবার দুপুরে এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমক্রেসি আয়োজিত ‘ছায়া সংসদ বিতর্ক’ প্রতিযোগিতায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে এসব কথা বলেন পিবিআই প্রধান।
বনজ কুমার বলেন, ‘নুসরাত হত্যা মামলার মোট ৯২ সাক্ষীর মধ্যে ১৩ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। আমরা খুবই সজাগ, পিবিআই, পুলিশ সদর দপ্তর, জেলা পুলিশ সুপার যাতে এখানে ভয়ভীতি দেখিয়ে কোনো প্রকার সাক্ষ্য নড়চড় করা না যায়, আমরা সেটি মনিটরিং করছি।’
নুসরাত হত্যার বিচার সুষ্ঠু ও দ্রুত সম্পন্ন হবে এ আশাবাদ ব্যক্ত করে পুলিশের এই কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘আমাদের ভাগ্য ভালো যে, এখানে পাবলিক প্রসিকিউটরের বাইরেও নুসরাত জাহান রাফির মামলার পক্ষে তাঁর ভাই একজন সলিসিটর নিয়োগ করেছেন।’
‘সাহসিকতা নুসরাত, তুমিই যুক্তি, তুমিই প্রতিবাদ’ স্লোগানে ডিবেট ফর ডেমক্রেসি আয়োজিত বিতর্কের মূল বিষয় ছিল 'নারী নিপীড়ন প্রতিরোধে মূল্যবোধের চর্চা।’
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণের সঞ্চালনায় এতে অংশ নেয় সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজ ও ইউনিভার্সিটি অব সাউথ এশিয়া। বিরোধী দল হিসেবে বিতর্ক প্রতিযোগীতায় বিজয়ী হয় ইউনিভার্সিটি অব সাউথ এশিয়ার শিক্ষার্থীরা।
গত ৬ এপ্রিল সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত পরীক্ষায় অংশ নিতে মাদ্রাসায় গেলে দুর্বৃত্তরা তাঁকে ডেকে কৌশলে মাদ্রাসার ছাদে নিয়ে যায়। পরে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ওই ঘটনার পাঁচ দিন পর ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় নুসরাতের।
পরবর্তী সময়ে এ ঘটনায় ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলাকে প্রধান আসামি করে আটজনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান।
এ মামলায় পিবিআই ও পুলিশ ২১ জনকে গ্রেপ্তার করে। এদের মধ্যে হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত থাকার দায় স্বীকারকারী পাঁচজনসহ মোট ১২ জন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
পরবর্তী সময়ে গত ২৯ মে নুসরাত হত্যা মামলার তদন্ত কমকর্তা পিবিআইয়ের পরিদর্শক শাহ আলম জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম জাকির হোসেনের আদালতে ১৬ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেন। অভিযোগপত্রের ভিত্তিতে এর বাইরে থাকা পাঁচ ব্যক্তিকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেন আদালত।