বর্ষায় মুস্তাফিজের বধূবরণ
বৌভাতের অনুষ্ঠানে ঢোকার গেটটা ছিল দেখার মতো। অনেক বড়; সাদা ও সবুজের মিশেল। ওই গেট দিয়ে প্রবেশ করেই দেখা মিলল অন্য মুস্তাফিজের। পেসার মুস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে আছেন তাঁর স্ত্রী সুমাইয়া পারভীন শিমু। বর-বধূ সাজে আছেন দুজনই। আজ যে ওই দম্পতির বৌভাত।
ফিজের গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার তারালি ইউনিয়নের তেঁতুলিয়া গ্রামে আয়োজন করা হয় বৌভাত। প্রায় আড়াই হাজার অতিথি মধ্যাহ্ণ ভোজে আপ্যায়িত হন। তাঁরা দোয়া করলেন মুস্তাফিজ-শিমু দম্পতিকে। অতিথিদের আপ্যায়ন ও নববধূকে ঘরে তুলে নিলেন ফিজের বাবা আবুল কাসেম ও মা মাহমুদা খাতুন।
অফ হোয়াইটের পাঞ্জাবির ওপর কটি পরেন মুস্তাফিজ। শিমুর পরনে গাঢ় লাল বেনারসি শাড়ি। লাজুক হাসির ফিজকে দেখে কে বলবে লর্ডসেও প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের আতঙ্ক ছিলেন তিনি! শহর থেকে বহুদূরে কোলাহলমুক্ত সবুজ বৃক্ষ লতার সুনিবিড় ছায়ায় বৃষ্টিভেজা আষাঢ়ে গ্রামীণ পরিবেশের এ অনুষ্ঠানে নবদম্পতি কেড়ে নিয়েছিলেন সবার নজর।
আপ্যায়নের এক ফাঁকে মুস্তাফিজের বাবা আবুল কাসেম বলেন, ‘বিশ্বকাপে বাংলাদেশ হেরেছে কিন্তু মুস্তাফিজ হারেনি। এটা আমাদের জন্য গৌরবের বিষয়। লর্ডসে মুস্তাফিজের নাম লেখা থাকবে। আগামী বিশ্বকাপে ইনশা আল্লাহ বাংলাদেশ ছিনিয়ে আনবে। প্রধানমন্ত্রী খেলার প্রতি আগ্রহ দেখিয়েছেন। তাঁকে ধন্যবাদ জানাই।’
মুস্তাফিজের বড়ভাই মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘বৌভাতে এলাকার মানুষ ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা এসেছেন। এ জন্য আমরা খুবই খুশি। দেশবাসী ও তাঁর শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাছে দোয়া চাই। তাদের জন্য দোয়া করবেন।’
মাহফুজুর রহমান আরো বলেন, ‘অবশ্যই স্বপ্ন দেখি দেশের জন্য সে আরো ভালো করতে পারে।’
মঞ্চে বসতেই সবাই করতালি দিয়ে অভিনন্দন জানান ওই দম্পতিকে। সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামের মো. রওনাকুল ইসলামের মেয়ে সুমাইয়া পারভিন শিমু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের সম্মান প্রথম বর্ষের ছাত্রী।
পাঁচ লাখ এক টাকা দেনমোহরে গত ২২ মার্চ বিয়ে হয় তাঁদের। কথা ছিল বিশ্বকাপের পর শিমুকে বরণ করে তুলে নেওয়া হবে। বিবাহোত্তর সংবর্ধনা ও বৌভাতের সেই কাঙ্ক্ষিত দিনটিই ছিল আজ।
বৌভাতে ছিলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. আ ফ ম রুহুল হক, সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুনসুর আহমেদ, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম , সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার সাজ্জাদুর রহমান।
অনুষ্ঠানে ছিলেন এক ঝাঁক গণমাধ্যমকর্মী। যারা এতদিন তাঁর পারফরম্যান্স নিয়েই লিখেছেন। তুলেছেন ছবি। আজ তারা মাঠের বাইরে দেখলেন নতুন এক মুস্তাফিজকে।