সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলায় দুর্বৃত্তদের ছুড়ে মারা এসিডে আঙ্গুরী খাতুন (৩০) নামের এক গৃহবধূর মুখ ঝলসে গেছে।

গত মঙ্গলবার রাতে উপজেলার চরদোগাছী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আক্রান্ত গৃহবধূ গ্রামের শাহাদত হোসেনের স্ত্রী ও রায়গঞ্জ উপজেলার বাসুরিয়া গ্রামের জয়নাল আবদীনের মেয়ে।

আঙ্গুরীর বাবা জয়নাল আবদীন বলেন, প্রায় তিন বছর আগে শাহাদতের সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর মেয়ে আঙ্গুরীর। গত মঙ্গলবার রাতে তাঁর শ্বশুর ফোন করে জানান, রাতে ঘরে বসে ভাত খাওয়ার সময় কে বা কারা আঙ্গুরীর মুখে এসিড ছুড়ে মেরে পালিয়ে গেছে। পরে চিৎকার শুনে বাড়ির লোকজন ছুটে এসে দ্রুত তাঁকে সিরাজগঞ্জ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

জয়নাল আবদীন আরো বলেন, আঙ্গুরীর শ্বশুরের সঙ্গে জমি নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে তাঁর চাচাতো ভাই সুজাব আলী ও ভাতিজা আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে বিরোধ চলে আসছিল। এসব নিয়ে ১৫ দিন আগে প্রতিপক্ষের লোকজন তাঁদের খড়ের পালায় আগুন ধরিয়ে দেয়। জমি সংক্রান্ত ওই বিরোধের জেরেই আঙ্গুরীর ওপর এসিড হামলা হয়েছে বলে জয়নালের ধারণা।

এ ব্যাপারে কামারখন্দ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুল ইসলাম বলেন, ‘গৃহবধূর মুখে এসিড ছুড়ে মারার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। আমরা বলেছি মামলা দিতে। কিন্তু তারা এখনো আসেননি। মামলা করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

এসিড আক্রান্ত আঙ্গুরীর শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শামীমুল ইসলাম বলেন, ‘আঙ্গুরীর মুখে এসিড অথবা কেমিক্যালজাতীয় কিছু ছুড়ে মারা হয়েছে। পরীক্ষা শেষে বলা যাবে আসলে জিনিসটি কী। তবে তিনি ভালো আছেন। তাঁর শরীরের ৭ শতাংশ ঝলসে গেছে।’

এদিকে ওই গৃহবধূর মুখে এসিড ছুড়ে মারার খবরে তাঁর পাশে এসে দাঁড়িয়েছে বেসরকারি সংস্থা এসিড সারভাইভরস ফাউন্ডেশন (এএসএফ)। গতকাল বুধবার রাতেই উন্নত চিকিৎসার উদ্দেশে আঙ্গুরীকে ঢাকাস্থ এএসএফ চিকিৎসাকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়।

ফাউন্ডেশনের প্রোগ্রাম অফিসার রুনা লায়লা বলেন, ‘আঙ্গুরীর ওপর পরিকল্পিতভাবে এসিড ছুড়ে মারা হয়েছে। তাঁর মুখমণ্ডল ঝলসে গেছে। আমরা তাঁর চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছি।’