নওগাঁয় ৩০টি গ্রাম প্লাবিত, ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ পানিবন্দি
যত দূর দৃষ্টি যায় তত দূর শুধু পানি আর পানি। কয়েক দিনের টানাবর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নওগাঁর মান্দার আত্রাই নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙ্গে কসবা ও বিষ্ণপুর ইউনিয়নের ২০টি গ্রাম এবং নতুন করে আত্রাই উপজেলার হাটকালুপাড়া ইউনিয়নের ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। আত্রাই নদীর বাঁধ ভেঙ্গে কসবা, বিষ্ণুপুর ও হাটকালুপাড়া ইউনিয়নের ৩০টি গ্রামের ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
একইসঙ্গে জোতবাজার, বানডুবি, বাগাতিপাড়া, গোয়ালমান্দা, কালিকাপুর, দ্বারিয়াপুর বেড়িবাঁধ, খুদিয়াডাঙ্গা পূর্বপারসহ অন্তত ৩০টি পয়েন্ট ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ভাঙন ঠেকাতে স্থানীয়রা স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিত্বে দিন-রাত পাহারা দিচ্ছে। উপজেলার ওই তিন ইউনিয়নের অধিকাংশ ফসলি জমির ধান, সবজির মাঠ পানির নিচে তলিয়ে এবং পুকুরের মাছ ভেসে গেছে।
আজ বৃহস্পতিবার আত্রাই নদীর পানি বিপৎসীমার ৯০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এদিকে সব হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে মানুষ। আর প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল প্রকার সহযোগিতা করার আশ্বাস প্রদান করা হয়েছে।
কয়েকজন বানভাসি জানায়, হঠাৎ করে বাঁধ ভেঙ্গে গেছে। তারা স্বপ্নেও ভাবেনি এভাবে বাঁধটি ভেঙ্গে যাবে। এখন শুধু মাঠকে মাঠ পানি আর পানি। সব কিছু ডুবে গেছে। থাকার জায়গা ও খাওয়া-দাওয়া নাই। অনেক কষ্টে রয়েছে তারা। বেড়ি বাঁধ ভাঙ্গার কারণে রাস্তায় এসেছে তারা। এখন তারা নিঃস্ব। তাই তারা দ্রুত বাঁধটি মেরামত করার জোর দাবি জানায়। মাঠের ফসল হারিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে বন্যার্তদের। কীভাবে সংসার চলবে; ছেলেমেয়েদের স্কুলের বই-খাতা কিনে দেবে এ চিন্তায় ঘুম নেই চোখে। শুধু মাঠের ফসল নয়; সাথে শত শত পুকুরের মাছও ভেসে গেছে বন্যার পানিতে।
মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘সকল টিম কাজ করছে আর সব জায়গায় খোঁজখবর রাখা হচ্ছে। দূর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছি। বন্যাকবলিত মানুষের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ শুরু করা হয়েছে। একই সঙ্গে মোমবাতি, খাবার স্যালাইনসহ অন্যান্য সামগ্রী সরবরাহ করা হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে আজ বৃহস্পতিবার থেকে আত্রাই নদীর পানি কমার সম্ভাবনা রয়েছে। বুধবার ভোরে মান্দা উপজেলার চকবালু এলাকায় আত্রাই নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ প্রায় ২০০ ফিট ভেঙ্গে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়ে মানুষ।