পরীক্ষার ফল পাল্টে দেওয়ার নামে প্রতারণা, গ্রেপ্তার দুই
‘এইচএসসি পরীক্ষায় ফেল করবেন? পাস করা দরকার? খারাপ পরীক্ষা দিয়েও জিপিএ ৫ দরকার? তো, চলে আসুন আমাদের কাছে। টাকার বিনিময়ে বোর্ড থেকে পরীক্ষার ফলাফল পরিবর্তন করে দেব।’ এসব কথা বলে ফল প্রত্যাশীদের প্রলোভন দেখিয়ে অনেক টাকা হাতিয়ে নিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যায়ের দুই শিক্ষার্থী।
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপে ফল প্রত্যাশীদের টার্গেট করে এসব কথা বলতেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যায়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মুরাদ হাসান (১৯) এবং পার্থ সরকার (১৯)। মিথ্যা প্রলোভনে পা দিয়েছেন অনেক ফল প্রত্যাশী। করেছেন বিকাশের মাধ্যমে লেনদেনও।
এই ধরনের ঘটনায় ভুক্তভোগীসহ অনেকেই অভিযোগ করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের সাইবার ক্রাইম বিভাগে । এসব অভিযোগের ভিত্তিতে গতকাল বুধবার রাত ৮টার দিকে রাজধানীর সূত্রাপুর থানা এলাকা থেকে মুরাদ হাসান ও পার্থ সরকারকে আটক করে সিটিটিসির সাইবার ক্রাইম বিভাগ।
আজ বৃহস্পতিবার সিটিটিসির সাইবার ক্রাইম বিভাগের সিনিয়র সহকারী কমিশনার সাইদ নাসিরুল্লাহ এনটিভি অনলাইনকে এই তথ্য জানিয়েছেন।
সিনিয়র সহকারী কমিশনার সাইদ নাসিরুল্লাহ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘ভুক্তভোগীসহ কয়েকজন আমাদের কাছে এই ধরনের কয়েকটি অভিযোগ করেছেন। পরে ঘটনার তদন্তে নেমে মুরাদ হাসান ও পার্থ সরকারকে শনাক্ত করি। তারা ভুয়া ফেসবুক আইডি ব্যবহার করে পরীক্ষার্থীদের প্রলোভন দেখাতেন। বসবাসের স্থানও পরিবর্তন করতেন বারবার।’
সাইদ নাসিরুল্লাহ বলেন, ‘গতকাল এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করার পরও তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। অথচ এই ভুক্তভোগীরাই কিন্তু তাদের টাকা দিয়েছেন পরীক্ষার ফল পাল্টে নেওয়ার জন্য! বিকাশের মাধ্যমে টাকার লেনদেন করেছেন তাঁরা।’
সিনিয়র সহকারী কমিশনার বলেন, ‘গতকাল রাজধানীর সূত্রাপুর থানার নাসিরুদ্দিন সরদার লেনের একটি বাসা থেকে তাদের দুজনকে আটক করি। পরে সূত্রাপুর থানায় তাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করি। আজ বৃহস্পতিবার আসামিদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠাই আমরা। আদালতের কাছে রিমান্ড আবেদন করলে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।’
সাইদ নাসিরুল্লাহ বলেন, ‘এখন রিমান্ডে রেখে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এসব অভিযোগের কথা জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে আরো কয়েকজন জড়িত থাকার কথা বলেছে। তবে ফলাফল পাল্টে নেওয়ার জন্য বোর্ডে তাদের কোনো যোগাযোগ নেই বলে আমাদের জানিয়েছে।’
এই সিনিয়র সহকারী কমিশনার আরো বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী হওয়ার পরও উচ্চভিলাসী জীবন-যাপন করে। ব্যবহার করে আইফোন আর দামি কম্পিউটার। এইচএসসি পরিক্ষার ফল প্রকাশের আগে তারা এক লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে আমরা অভিযোগ পেয়েছি। তবে সত্যিকার অর্থে কত টাকা হাতিয়ে নিয়েছে তার ঠিক নেই।’