ময়মনসিংহে ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে গৃহহীন শতাধিক পরিবার
ময়মনসিংহে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। গত কয়েক দিনের প্রবল ভাঙনের মুখে জেলার তিন উপজেলার শতাধিক পরিবার বসতভিটা ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে। পাকা সড়ক, গাছপালা, বাঁশঝাড়সহ কয়েকশ হেক্টর জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।
উজান থেকে নেমে আসা ঢলে ব্রহ্মপুত্রের পানি দুই কূল ছাপিয়ে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। নদের পানি বিপৎসীমা ছুঁইছুঁই করছে। এর মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার নদীর পানি বিপৎসীমার ২১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্রহ্মপুত্র নদের করাল গ্রাসে ময়মনসিংহের সদর, ঈশ্বরগঞ্জ, গৌরীপুর, ত্রিশাল ও গফরগাঁও উপজেলার কমপক্ষে ১৩টি পয়েন্টে তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে।
এরই মধ্যে সদর উপজেলার অষ্টাধর, সেনেরচর, ঝাপরকান্দা, ভাবখালী বাজার, কিসমত বাজার, ভাংনামারী, গৌরীপুর উপজেলার খোদাবক্সপুর, ত্রিশালের কালিরবাজার, ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মরিচারচর, দত্তপাড়া, বটতলা, গফরগাঁও উপজেলার পৌর এলাকাসহ চরআলগী, চরমাদাখালী, মীরপাড়া, চরমছলন্দ, বালুয়াকান্দা, লামকাইন ও দত্তেরবাজারের প্রায় ২৫ কিলোমিটার এলাকা ভাঙনের কবলে পড়েছে। হুমকির মুখে রয়েছে নদী-তীরবর্তী হাজারো ঘরবাড়ি, স্কুল, মসজিদ-মাদ্রাসা ও রেললাইন।
বসতভিটা ও ফসলি জমি রক্ষার দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনায় গফরগাঁও ও সদর উপজেলার সেনেরচরে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে বন্যাকবলিত মানুষ। ছবি : এনটিভি
এদিকে, বসতভিটা ও ফসলি জমি রক্ষার দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করে সদর উপজেলার সেনেরচর ও গফরগাঁওয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে বন্যাকবলিত মানুষ। গত কয়েক দিনের ব্যবধানে সদর উপজেলার সেনেরচর-অষ্টাধর বাজার পাকা সড়কের এক কিলোমিটারসহ শতবর্ষের গাছপালা, বাঁশঝাড় ও কয়েকশ হেক্টর জমি নদীর পানিতে বিলীন হয়ে গেছে। সরিয়ে নিতে হয়েছে দুই শতাধিক ঘরবাড়ি। ভাঙনের আতঙ্কে শতাধিক পরিবার বসতভিটা ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন।
ময়মনসিংহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জহুরুল ইসলাম জানান, ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনরোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্য ৯০০ কোটি টাকার প্রকল্পের প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে এবং চলতি ভাঙন ঠেকাতে সদর উপজেলার অষ্টাধরে বালুর বস্তা ফেলার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।