ডেঙ্গুর কারণে মশারির ব্যবসা জমজমাট
রাজধানীতে মহামারীর আকার ধারণ করেছে ডেঙ্গু জ্বর। প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। রোগীদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতালগুলো।
এই ডেঙ্গু এড়াতে এবং এডিস মশার কামড় থেকে বাঁচতে সাধারণ মানুষ ছুটছে মশারির দোকানগুলোতে। এক সময় যারা মশারি ব্যবহার করত না, তারাও এখন মশারি কিনতে ছুটছে। এই কারণে মশারি বিক্রি বেড়ে গেছে দোকানিদের।
আজ রোববার রাজধানীর ফুলবাড়িয়া সিটি সুপার মার্কেটের নিচতলার পাইকারি মশারির মার্কেটে ঘুরে দেখা যায়, দোকানি মালিক ও কর্মচারী সবাই কর্মব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। কেউ মশারি প্যাকেট করছিল, কেউ বা আবার ক্রেতাকে মশারি দেখাচ্ছিল।
মশারি বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে ফুলবাড়িয়া সিটি সুপার মার্কেটের সোনারগাঁও এন্টারপ্রাইজের মালিক শফিকুল ইসলাম এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ঢাকায় ডেঙ্গু মশার আক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য গত কয়েক দিন মশারি বিক্রি বেড়েছে কয়েক গুণ। আমাদের বেচা-বিক্রি আগের চেয়ে অনেকটাই বেশি।
কম দামি মশারি বেশি বিক্রি হয় বলে জানিয়ে শফিকুল ইসলাম বলেন, প্রতিটি ছোট মশারির পাইকারি দাম ৯০ থেকে ৯৫ টাকা যা খুচরা মার্কেটে ১১০ থেকে ১২০ টাকা। চার হাত পাঁচ হাত মশারির পাইকারি দাম ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা, যা খুচরা মার্কেটে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। এ ছাড়া আরো দামি মশারি মূল্য ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা করে।
তবে স্বাগতম মশারি স্টোরের মালিক এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমার দোকানের বেচা-বিক্রি আগের মতোই। বেশিও না, কমও না।’
ডেঙ্গুর প্রভাব মশারি বিক্রিতে পড়েছে কি না জানতে চাইলে দোকানমালিক বলেন, এ শহরের মানুষ মশারি খুব একটা ব্যবহার করে না, সবাই স্প্রে-কয়েল ব্যবহার করে।
ফুলবাড়িয়া সিটি সুপার মর্কেটের আরেকটি পাইকারি দোকান সহিদ ট্রেডার্সের মালিক আবদুস সহিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ডেঙ্গুর প্রভাবে মশারি বিক্রি আগের চেয়ে কয়েক গুণ বেড়েছে। তিনি বলেন, টিভি- পত্রিকায় ও সরকারের ডেঙ্গু প্রচার-প্রচারণায় মানুষের সচেতনতা আগের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। শহরের লোকজন ম্যাজিক মশারি বেশি ব্যবহার করে।
আবদুস সহিদ বলেন, ম্যাজিক মশারিগুলোতে ফ্যানের বাতাস বেশি পাওয়া যায়। মশাও ঢুকতে পারে না। তাই এগুলো বেশি চলে। প্রতিটি সিঙ্গেল ম্যাজিক মশারির দাম ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। আর বড়গুলো ছয় ফুট বাই সাত ফুটগুলোর দাম ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা।
গাবতলী থেকে আসা আসলাম নামের একজন পাইকারি মশারি ক্রেতার সঙ্গে কথা হয় এনটিভি অনলাইনের। তিনি বলেন, গত কয়েকদিন রেকর্ড পরিমাণ মশারি বিক্রি করেছি। এখনো অনেক চাহিদা আছে। তাই আসলাম নতুন কিছু মাল নিতে।
হাবিব মিয়া নামের আরেকজন পাইকারি ক্রেতার সঙ্গে কথা হয়। তিনি পেশায় ভ্যানগাড়ি চালক হলেও দুই দিন ধরে মশারি বিক্রি করেন। হাসিমুখে তিনি বলেন, হাসপাতাল ও মহল্লার গলিতে বিক্রি করি। দৈনিক দেড় থেকে দুই হাজার টাকা লাভ থাকে বলে তিনি জানান।