ডিআইজি মিজানের ভাগ্নের অর্থের উৎস চেয়েছেন হাইকোর্ট
পুলিশের বরখাস্ত হওয়া উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানের ভাগ্নে কারাগারে থাকা উপপরিদর্শক (এসআই) মাহমুদুল হাসানের অর্থের উৎস জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।
আজ সোমবার এসআই মাহমুদুল হাসানের জামিন আবেদনের শুনানিকালে বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
শুনানি শেষে আদালত এসআই মাহমুদুল হাসানকে কেন জামিন দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে দুই সপ্তাহের রুল জারি করেন।
আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী রবিউল আলম বুদু। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমিন উদ্দিন মানিক। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
শুনানি বিষয়ে খুরশীদ আলম খান জানান, এসআই মাহমুদুল হাসানকে কেন জামিন দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে দুই সপ্তাহের রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে তাঁর অর্থের উৎস জানতে চেয়েছেন আদালত। কারণ তিনি চাকরিতে যোগদানের আগেই অনেক টাকা আছে বলে দেখিয়েছেন এবং এফডিআর করে তাঁর অ্যাকাউন্টে যেসব টাকা রেখেছিলেন তাঁর নমিনি করা ছিল ডিআইজি মিজান। সাধারণত প্রত্যেক ব্যক্তি নিজের স্ত্রী সন্তান বা মা-বাবাকে নমিনি করেন। কিন্তু এসআই মাহমুদুল হাসান তাঁর মামা ডিআইজি মিজানকে নমিনি করায় আরো সন্দেহ ঘনীভূত হয়। এ কারণে আদালতও তাঁর অর্থের উৎস কোথায় তা জানতে চেয়েছেন।
অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে গত ২৪ জুন দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে (ঢাকা-১) কমিশনের পরিচালক মঞ্জুর মোর্শেদ বাদী হয়ে মামলা করেন। এতে ডিআইজি মিজান ছাড়াও তাঁর স্ত্রী সোহেলিয়া আনার রত্না, ভাই মাহবুবুর রহমান ও ভাগ্নে মাহমুদুল হাসানকে আসামি করা হয়। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে তিন কোটি ২৮ লাখ ৬৮ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও তিন কোটি সাত লাখ পাঁচ হাজার টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়। মাহমুদুল হাসান ২০১৭ সালের ২৬ আগস্ট উপপরিদর্শক হিসেবে যোগ দেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামি মিজানুর রহমান তাঁর ভাগ্নে মাহমুদুল হাসানের নামে ২৪ লাখ ২১ হাজার ২২৫ টাকায় গুলশান ১-এর পুলিশ প্লাজা কনকর্ডে ২১১ বর্গফুট আয়তনের একটি দোকানের বরাদ্দ গ্রহণ করেন।
মিজানুর রহমান নিজে নমিনি হয়ে তাঁর ভাগ্নে মাহমুদুল হাসানের নামে ২০১৩ সালের ২৫ নভেম্বর একটি ব্যাংকে এফডিআর অ্যাকাউন্ট করে ৩০ লাখ টাকা জমা করেন। তবে দুদকের অনুসন্ধান চালু হওয়ার পর তিনি এফডিআর ভেঙে সুদে আসলে ৩৮ লাখ ৮৮ হাজার ৫৭ টাকা তুলে ফেলেন।
অভিযোগে আরো বলা হয়, মিজানুর রহমান তাঁর স্ত্রী রত্না রহমানের নামে কাকরাইলে এক হাজার৭৭৬ বর্গফুটের একটি বাণিজ্যিক ফ্ল্যাট কিনে ২০১১ সালে চুক্তিনামা করে বিভিন্ন সময় এক কোটি ৭৭ লাখ ৯৬ হাজার ৩৫০ টাকা নির্মাণ কোম্পানিকে পরিশোধ করেন। পরে ২০১৬ সালে ফ্ল্যাটটি ভাগ্নে মাহমুদুল হাসানের নামে দলিল রেজিস্ট্রি করেন।
এ মামলায় গত ১ জুলাই হাইকোর্টে জামিন আবেদনের পর আদালত এসআই মাহমুদুল হাসানকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেন। সে অনুসার ৪ জুলাই নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চান মাহমুদুল। ওই আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠান আদালত। এরপর তিনি হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন।