শুধু রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী ভিভিআইপি : হাইকোর্ট
ফেরিঘাটে এক যুগ্ম সচিবের অপেক্ষায় প্রায় তিন ঘণ্টা ফেরি না ছাড়ায় স্কুলছাত্র তিতাস ঘোষের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ সময় আদালত ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শুধু রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (ভিভিআইপি)। এ ছাড়া আর কেউ ভিআইপি নন। ওই যুগ্ম সচিব ভিআইপি নন, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী।
এ বিষয়ে দায়ের করা রিটের শুনানিতে আজ বুধবার বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করে এ আদেশ দেন।
আদালত এ ঘটনায় অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি গঠনের পর ওই কমিটিকে তিন সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী জহির উদ্দিন লিমন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
এর আগে গত ২৯ জুলাই তিতাস ঘোষের মৃত্যুর ঘটনায় সংশ্লিষ্ট যুগ্ম সচিব ও ফেরির ম্যানেজারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে রিট করা হয়। একই সঙ্গে রিটে মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি এক নম্বর ফেরিঘাটে যুগ্ম সচিবের অপেক্ষায় প্রায় তিন ঘণ্টা ফেরি না ছাড়ায় তিতাসের মৃত্যু ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন ও তার পরিবারকে তিন কোটি টাকা প্রদানের নির্দেশ চাওয়া হয়। এছাড়া ফেরি ঘাটে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অ্যাম্বুলেন্স চলাচল নিশ্চিত করতে নির্দেশ চাওয়া হয়েছে। আইনজীবী জহির উদ্দিন লিমন এ রিট করেন।
গত ২৫ জুলাই রাতে সরকারের এটুআই প্রকল্পের যুগ্ম সচিব আবদুস সবুর মণ্ডলের গাড়ির অপেক্ষায় প্রায় তিন ঘণ্টা ফেরিঘাটে বসেছিল তিতাস ঘোষের অ্যাম্বুলেন্স। তিতাসের স্বজনরা ঘাটের লোকদের অনেক হাতে পায়ে ধরে ও কান্নাকাটি করেও ফেরি ছাড়াতে পারেননি। আবদুস সবুরের গাড়ি আসার পর ঘাটে থাকা কুমিল্লা নামের ফেরিটি ছাড়ে। এরপর ফেরিতেই তিতাসের মৃত্যু হয়। বিষয়টি জানাজানি হলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে তিতাসের মৃত্যু নিয়ে সংবাদ প্রকাশ ও প্রচারিত হয়। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তোলপাড় চলছে।