ভৈরবে দেড় কিলোমিটার সড়কে ভাঙন, যান চলাচল বন্ধ
কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার আনন্দবাজার থেকে আগানগর উত্তরপাড়া পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার রাস্তায় ভাঙনের কারণে ছয়-সাত মাস ধরে যানবাহন চলাচল বন্ধ আছে। এতে ওই এলাকার কয়েকটি গ্রামের সাধারণ লোকজন, শিক্ষার্থীদের চলাচলসহ কৃষিপণ্য বাজারজাত করায় অসুবিধার সৃষ্টি হয়েছে। চরম দুর্ভোগে থাকা স্থানীয় বাসিন্দারা রাস্তাটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা আবু সাইদ, কৃষক হাজি নূরুল ইসলাম, কাঁচা মালামাল ব্যবসায়ী শফিক মিয়া ও শিক্ষক আল আমিন সামি জানান, ভৈরব উপজেলা সদরের সঙ্গে আগানগর ইউনিয়নের আগানগর আনন্দবাজার থেকে আগানগর উত্তরপাড়া অংশের দেড় কিলোমিটার সড়কের বেশ কয়েকটি স্থান ভেঙে বড় বড় গর্তসহ অসংখ্য খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ওই রাস্তায় সব যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে ছয় থেকে সাত মাস ধরে। এতে আগানগর, লুন্দিয়া, খলাপাড়া ও চরপাড়া গ্রামের লোকজনের যাতায়াতে ব্যাপক প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছে।
কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলা সদরের সঙ্গে লুন্দিয়া-খলাপাড়া সংযোগ সড়কের আগানগর আনন্দবাজার অংশের বেহাল দশা। ছবি : এনটিভি
ভৈরবে যাতায়াতকারী এসব গ্রামের মানুষ বিভিন্ন যানবাহন থেকে আনন্দবাজার জিল্লুর রহমান স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে নেমে এই দেড় কিলোমিটার রাস্তা হেঁটে পাড়ি দিয়ে আবার যানবাহনে চড়ে যাতায়াত করছেন। এতে অতিরিক্ত অর্থ, শ্রম ও সময় ব্যয় হচ্ছে তাদের। বিশেষ করে অসুস্থ রোগী, নারী, বৃদ্ধ ও শিশু, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, কৃষিপণ্যসহ কাঁচা মালামালের ব্যবসায়ীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। তাঁরা অবিলম্বে রাস্তাটির সংস্কার চেয়েছেন।
এদিকে এই পথে চলাচলকারী ব্যাটারি ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক জুয়েল ও রফিক জানান, রাস্তাটিতে যানবাহন চলাচল ব্যাহত হওয়ায় যাত্রীদের পাশাপাশি তাঁরাও দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। যাত্রীদের যেমন অতিরিক্ত সময় ও অর্থ ব্যয় হচ্ছে, তেমনি তাঁদেরও আয়-রোজগার কমে গেছে।
তাঁদের কেউ কেউ বিকল্প পথে জগমোহনপুর, রাজনগর, শ্রীনগর, শিমুলকান্দি অথবা জগমোহনপুর, রাজনগর, চাঁনপুর হয়ে ভৈরবে যাত্রী বহন করলেও যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় না করতে পারায় এবং যাতায়াতে অতিরিক্ত সময় ব্যয় হওয়ায় লোকসানের মুখে পড়েছেন।
এদিকে এলাকার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জিল্লুর রহমান স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী নাজমুন্নাহার, রফিকুল ইসলাম হৃদয় ও ভাবনা বেগম জানায়, রাস্তাটিতে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় তারা বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাদের অতিরিক্ত সময়, অর্থ ব্যয়সহ মেধা বিকাশে বাধা তৈরি হয়েছে। তারা অবিলম্বে রাস্তাটি মেরামতে উদ্যোগী হতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
আগানগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হাজি মমতাজ উদ্দিন সড়কটির বেশ কয়েকটি স্থানে ভেঙে জনদুর্ভোগের কথা স্বীকার করে জানান, সড়কের ভাঙা অংশ মেরামতের জন্য অনুদান পেলে তিনি সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করবেন।
ভৈরব উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মো. আবু ইউসুফ জানান, সড়কটির দেড় কিলোমিটার অংশ ২০১৫-১৬ অর্থবছরে দুই কোটি ৩৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়। বর্ষার পানির তোড়ে সড়কটির বেশ কয়েকটি স্থানে ভেঙে যাওয়ার খবরে তিনি এরই মধ্যে সরেজমিন পরিদর্শন করে সংস্কারের জন্য অর্থ বরাদ্দ চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছেন। প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ পেলে তিনি দ্রুত সংস্কারকাজ করার উদ্যোগ নেবেন।