ডেঙ্গুর সময়ে প্রধানমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী বিদেশে থাকেন : ড. মোশাররফ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, এই সরকার নির্বাচিত সরকার নয়। তাই জনগণের প্রতি এই সরকারের দায়বদ্ধতা নেই। আর এ কারণে বন্যা ও ডেঙ্গুর সময়ে প্রধানমন্ত্রী বিদেশে, স্বাস্থ্যমন্ত্রী বিদেশে থাকেন। এ থেকে বোঝা যায় সরকারের কত অবহেলা এবং উদাসীন এ ব্যাপারে।
আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা জজ কোর্টের গেটের সামনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতামূলক র্যালির শুরুতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. মোশাররফ এসব কথা বলেন।
সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ বলেন, এই সরকারকে সহযোগিতা করার জন্য এবং জনগণকে সচেতন করার জন্য ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি আজ এই র্যালির আয়োজন করেছিল। কিন্তু আমাদের এই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিকে প্রশাসন পালন করতে না দেওয়ায় আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
ড. মোশাররফ বলেন, আমরা মনে করি এ দেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা প্রয়োজন। সব ধরনের সংকট থেকে উত্তরণ চাইলে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন। এই গণতন্ত্র এবং জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হলে গণতন্ত্রের মা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ এ নেতা বলেন, আজকে এই যে সরকারের ব্যর্থতা এবং উদাসীনতা এর জন্য এই ডেঙ্গু মশা বিরাট মহামারির আকার ধারণ করেছে। আমরা এর জন্য দায়ী করি সরকারকে আর সিটি করপোরেশনকে। আমাদের দাবি যত শিগগিরই আধুনিক কার্যকর ওষুধ এনে যথাযথভাবে ছিটিয়ে এই এডিস মশাকে নিশ্চিহ্ন করা প্রয়োজন। এ বছর যদি এটা করা সম্ভব না হয় তবে আগামী বছরও এই এডিস মশার ডিম থেকে যাবে এবং একই অবস্থা হতে পারে।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে সরকারের ব্যর্থতার কথা উল্লেখ করে বর্তমান স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের দুই মেয়রের পদত্যাগের দাবি করেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, যদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও সিটি করপোরেশন সমন্বিতভাবে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতো তবে এই ডেঙ্গু মহামারি আকার ধারণ করতো না।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, আমি ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত স্বাস্থ্যমন্ত্রী থাকা অবস্থায় তখনো ডেঙ্গু ছিল। আমরা তখন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং সিটি করপোরেশন সমন্বিতভাবে প্রোগ্রাম নিয়েছিলাম। আমি প্রত্যেক সিজনের পূর্বে সাদেক হোসেন খোকার সভাপতিত্বে আমরা সভা করে কৌশল নির্ধারণ করেছি এবং আমরা সফলও হয়েছি।
ড. মোশাররফ বলেন, তখনও ডেঙ্গু ছিল কিন্তু ডেঙ্গু প্রতিরোধে আমরা যেহেতু সচেতন ছিলাম তাই ডেঙ্গু এত মহামারি আকার ধারণ করতে পারেনি। তাই আজকে আমরা মনে করি এই সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও দুটি সিটি করপোরেশনের এটি ব্যর্থতা। তারা সময় মতো এডিস মশাকে নিধন করতে পারেনি যার জন্য আজকে এই ডেঙ্গু মহামারিতে রূপান্তরিত হয়েছে।
সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এখনও দুই মাস সামনে রয়েছে। আমরা রাজনীতি করি সেই দায়িত্ববোধ থেকে আমরা সারা বাংলাদেশের জনগণকে সচেতন করার জন্য এই কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। এখনও যদি জনগণ সচেতন হয়, যার যার বাড়িতে আটকে থাকা স্বচ্ছ পানি ফেলে দেয় এবং সরকার এখনও যদি সচেষ্ট হয় তাহলে এটাকে কমিয়ে আনা সম্ভব।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিবুন নবী খান সোহেল, বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রশিদ হাবিব, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মাওলা শাহিন, ঢাকা মহানগর শ্রমিকদলের সহসভাপতি সুমন ভূঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান বাদল প্রমুখ।