ঝুঁকি নিয়ে রেলসেতুতে মনোরঞ্জন, তৎপরতা নেই সেতুরক্ষীদের
ঢাকা-চট্টগ্রাম-সিলেট রেলপথের কিশোরগঞ্জের ভৈরবের মেঘনা নদীর ওপর নির্মিত মরহুম রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান রেলওয়ে সেতুতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অবাধে ফটোসেশন করছে কিছু মানুষ। প্রতিদিনই এমন দৃশ্য চোখে পড়ছে। তারা ট্রেন চলাচলকে তোয়াক্কা না করে সেতুর মুখে এবং মূল সেতুর ওপর গিয়ে বিভিন্ন ভঙ্গিমায় ছবি তোলে, দলবেঁধে বসে থাকে, গল্প-আড্ডায় মেতে থাকে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সেতু পারাপারে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞা সাইনবোর্ড ঝোলানো থাকলেও সেতুরক্ষীদের জোর তৎপরতা না থাকায় ভ্রমণকারী ওইসব মানুষ বাধাহীন হয়ে ওঠার সুযোগ পাচ্ছে, তাদের মনোরঞ্জনের কাজ করে যাচ্ছে। ফলে নারী, পুরুষ ও শিশুদের এ অবাধ সমাগম এবং আনন্দ-উল্লাস দুর্ঘটনার কারণে যেকোনো সময় বিষাদে রূপ নিতে পারে বলে অভিজ্ঞ মহলের আশঙ্কা।
সেতু এলাকায় ভ্রমণে আসা এমন কয়েকজনের সঙ্গে কথা বললে তাঁরা জানান, ভৈরব ঘনবসতিপূর্ণ একটি ব্যস্ত নগরী হওয়ায় এখানকার লোকজনের ভ্রমণ বা একটু নিশ্বাস ফেলার মতো স্থান বলতে এই মেঘনা নদীর তীর এবং সেতু এলাকা ছাড়া বিকল্প নেই। তাই তাঁরা এখানেই ছুটে আসেন পরিবার-পরিজন ও বন্ধু-বান্ধব নিয়ে।
সেতুর মুখে বা ওপরে অবস্থান করা ঝুঁকিপূর্ণ। এটি আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। এ ছাড়া যেকোনো সময় ঘটতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা। এসব জেনেও কেন ভ্রমণ করছেন—এমন প্রশ্নের জবাবে দর্শনার্থী ইফতি হোসাইন, স্বপ্না আফরোজ ও সৈকত মাহমুদ জানান, তাঁরা সাবধানতা অবলম্বন করেই এখানে ভ্রমণ করেন। তবে সেতুতে ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞায় ঝোলানো সাইনবোর্ডটি ছাড়া আর কোনো বাধার মুখোমুখি না হওয়ায় এখানে ভ্রমণটা তাঁদের জন্য সহজ হচ্ছে।
সেতু এলাকা পাহারার কাজে নিয়োজিত থাকা পুলিশ ক্যাম্পের সহকারী উপপরিদর্শক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা আটজন সদস্য সেতু এলাকার সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত আছি। সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত দুই শিফটে ডিউটি করে থাকি। তবে স্থানীয় লোকজন অনেক সময় আমাদের বাধা অমান্য করে এখানে প্রবেশ করেন। আমরা দেখামাত্রই তাঁদের সরিয়ে দিই।’
ভৈরব রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল মজিদ জানান, রেলব্রিজ ও রেললাইনের ওপর ১৪৪ ধারা জারি থাকে সব সময়। ব্রিজের ওপর দিয়ে মানুষের হাঁটাচলা সম্পূর্ণ বেআইনি। ব্রিজের ওপর দিয়ে চলাচলের কারণে রেলওয়ে পুলিশ বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে থাকে। ওই এলাকায় বলবৎ রেলওয়ের আইন মেনে চলার জন্য জনসাধারণের প্রতি আহ্বান জানান ওসি।