আ.লীগ যখনই দাবি জানায়, তখনই গুজব ছড়ানো হয় : আমু
আওয়ামী লীগ যখনই দেশের স্বার্থে কোনো দাবি পেশ করে তখনই গুজব ছড়িয়ে আন্দোলনকে ব্যাহত করার চেষ্টা করা হয় বলে মন্তব্য করেছেন দলটির উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু।
আজ সোমবার রাজধানীর ধানমণ্ডিতে বঙ্গবন্ধুর বাসভবনের সামনে শেখ কামালের ৭০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় এ কথা বলেন আমু।
আমির হোসেন আমু বলেন, যখন ভাষা আন্দোলন শুরু হয়, তখন বলা হয়েছে ভারত থেকে হিন্দুরা এসে আন্দোলন করছে। বাংলা ভাষা সংস্কৃত ভাষা থেকে এসেছে। এভাবে গুজব ছড়িয়ে আন্দোলনকে ব্যাহত করার চেষ্টা করেছে।
সাবেক শিল্পমন্ত্রী বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু দ্বিতীয় বিপ্লবের ডাক দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এত রক্তের বিনিময় অর্জিত স্বাধীনতা আমি কারো কাছে বন্ধক দিতে পারব না। বঙ্গবন্ধু বলেছেন, আমি তিন বছর তোমাদের কিছুই দিতে পারব না। মানুষ তা মাথা পেতে নিয়েছিল। এ বক্তব্যের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু বোঝাতে চেয়েছেন, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক, আইএমএফ এ সমস্ত জায়গায় দেশকে বন্ধক দিয়ে তিনি উন্নয়ন করতে চান না। নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে তিনি উন্নয়ন করতে চান। আজকে সেই পথ অনুসরণ করেছেন তাঁর সুযোগ্য কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী, তিনি ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের প্রতি বৃদ্ধাঙুলি দেখিয়ে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর মতো একটি সেতু নির্মাণ করতে সক্ষম হচ্ছেন। আজকে তাদের সহ্য হয় না। এই পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর ২০০১ সালের ১১ জুলাই স্থাপন করেছেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই সেতু তখনই হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর তখনকার যোগাযোগমন্ত্রী তার নিজ এলাকায় নেওয়ার জন্য চেষ্টা করেন এবং তা পিছিয়ে যায় এবং তারা মনে করে যে যদি পদ্মা সেতু হয় শেখ হাসিনার সুনাম হবে। তাই আর এই সেতু তখন হয় নাই। তবে দেরিতে হলেও পদ্মা সেতুর কাজ শেখ হাসিনাই সম্পূর্ণ করছেন। আজকে সেটাকে নিয়েও নানান রকম ষড়যন্ত্র। যখন শেখ হাসিনা বলল, আমরা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করব তখন তারা বিদেশে অপপ্রচার করল। যাতে রেমিটেন্স না আসে, যারা রেমিটেন্স পাঠায় তাদের মধ্যে অপপ্রচার করা হলো তোমরা টাকা দিও না, টাকা দিলে আর ফিরত পাবা না, এই টাকা পদ্মা সেতু খেয়ে ফেলবে। অপপ্রচার ছিল, সেটা আর ধোপে টেকে নাই। আজ নতুন করে অপপ্রচার, পদ্মা সেতুতে রক্ত লাগবে, কল্লা লাগবে। এ দেশের উন্নয়নের ধারা তারা সহ্য করতে পারে না।
আমির হোসেন আমু বলেন, ব্ঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর তারা ২১ বছর ক্ষমতায় ছিল। কিন্তু একটি দৃষ্টান্ত দেখাতে পারবে বড় কিছু করেছে? দৃষ্টিনন্দন কিছু করেছে? বিএনপির সময় দেশে খাদ্য ঘাটতি ছিল। আর শেখ হাসিনা যখন ক্ষমতায় আসে তখন ৪০ হাজার মেট্রিকটন খাদ্য ঘাটতি ছিল। সেটাকে মোকাবিলা করে ১৯৯৮ সালে বন্যা মোকাবিলা করে ২০০০ সালে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়। ২০০৯ সালে আবার যখন ক্ষমতায় আসি তখন ২৬ হাজার টন খাদ্য ঘাটতি ছিল। আবার শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সেই ঘাটতি পূরণ করে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করি।
স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মোল্লা মো. আবু কাওছারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি দেবাশীষ বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক রহমান টিটু ও ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোবাশ্বের হাসান চৌধুরী। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক পংকজ দেবনাথ।