বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সম্প্রচারের লক্ষ্যে দেশের সব বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল চুক্তি করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। আজ মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল মালিকদের সংগঠন অ্যাটকোর প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক শেষে তথ্যমন্ত্রী আরো জানান, দেশের চ্যানেলে বিদেশি সিনেমা প্রচারিত হওয়ায় কলাকুশলীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলেও জানানো হয়েছে অ্যাটকোর পক্ষ থেকে।

বিদেশি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন প্রচার বন্ধসহ নানা পদক্ষেপ নেওয়ায় তথ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান অ্যাটকো নেতারা। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সম্প্রচারের ক্ষেত্রে গাজীপুরের গ্রাউন্ড স্টেশন পর্যন্ত ফাইবার অপটিকের একাধিক বিকল্প লাইন স্থাপনের পরামর্শ দেন তারা। এ ছাড়া ক্যাবল নেটওয়ার্ক ডিজিটালাইজেশনের প্রক্রিয়া দ্রুত এগিয়ে নেওয়ার তাগিদ দেওয়া হয়।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট আমাদের গর্বের স্যাটেলাইট। সেখানে বিটিভি শুধু বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সম্প্রচারে গেছে। ইতিমধ্যে ছয়টি টেলিভিশন চ্যানেল বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সেবা গ্রহণের জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। বাকি চ্যানেলগুলো যাতে সহসা করে এজন্য বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। এ ব্যাপারে টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের (অ্যাটকো) পক্ষে কিছু কনসার্নের কথা বলা হয়েছে। সেগুলোসহ আলোচনা করে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান সেখানে উপস্থিত ছিলেন। সবাই খুব সহসাই বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের সঙ্গে চুক্তি করবে বলে আলোচনা হয়েছে।’

গুজব ও ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবিলায় সক্রিয় ভূমিকার জন্য দেশের গণমাধ্যমকে ধন্যবাদ জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সম্প্রচার খাতে দেশের আইন অনুযায়ী পরিপূর্ণ শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই কাজ করছে সরকার। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় অবশ্যই আমরা তা করতে সক্ষম হব।’

তথ্যমন্ত্রীর সভাপতিত্বে ও তথ্যসচিব আবদুল মালেকের সঞ্চালনায় অ্যাটকোর সহসভাপতি মোজাম্মেল হক বাবু, অ্যাটকোর কার্যনির্বাহী সদস্য ও প্রতিনিধিদের মধ্যে ইকবাল সোবহান চৌধুরী, আরিফ হাসান, আব্দুল হক, আহমেদ জোবায়ের, কাজী জাহিন এস হাসান, জ ই মামুন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহজাহান মাহমুদ, বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক এস এম হারুন-অর-রশীদ সভায় অংশ নেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যেই বাংলাদেশের গণমাধ্যমের জন্য অনেক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রচারের ক্ষেত্রে বিশৃঙ্খলা ছিল সেখানে অনেক শৃঙ্খলা ফিরে এসেছে। বিদেশি চ্যানেলের মাধ্যমে যে বিজ্ঞাপন প্রচার করা হয় সেটি পুরোপুরি বন্ধ না হলেও অনেকটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ক্যাবল অপারেটররা নিজস্ব চ্যানেলের মতো করে যে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করত সেটি বন্ধ হয়েছে। অর্থাৎ সার্বিকভাবে এখানে যে বিশৃঙ্খলা ছিল সেখানে অনেকটা শৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে। আমরা আশা করছি সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এখানে পরিপূর্ণ শৃঙ্খলা ফিরে আসবে।’

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে বিটিভির সম্প্রচার নির্বিঘ্ন এবং সুচারু হচ্ছে উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট এক বছর আগেই উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। এ পর্যন্ত যে ফলাফল তাতে বিটিভির ক্ষেত্রে কোনো অসুবিধা পরিলক্ষিত হয়নি। সবাই অত্যন্ত স্বচ্ছন্দে বিটিভি দেখতে পাচ্ছে।’

গুজব ও ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবিলায় গণমাধ্যমের ভূমিকার প্রশংসা করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি সব টেলিভিশন চ্যানেল ও পত্র-পত্রিকাকে ধন্যবাদ জানাই যে, দেশে যে কিছুদিন ধরে গুজব তৈরি করার চেষ্টা হয়েছিল তার বিরূদ্ধে আপনারা অত্যন্ত জোরালো ভূমিকা রেখেছেন। একই সঙ্গে ডেঙ্গু পরিস্থিতি  মোকাবিলা ও জনসচেতনতা বৃদ্ধিতেও দেশের সব টিভি চ্যানেল ও পত্র-পত্রিকা অত্যন্ত ভালো প্রচার চালাচ্ছে।’