ফরিদপুরে দুই চাচাতো ভাইয়ের পাল্টাপাল্টি হামলা, দুজন নিহত
ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার কাইচাইল মধ্যপাড়া মাদ্রাসা এলাকায় দুই চাচাতো ভাইয়ের লোকজনের পাল্টাপাল্টি হামলায় দুজন নিহত ও দশজন আহত হয়েছেন। আজ শনিবার বিকেলে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত দুজন হলেন রওশন আলী মিয়া (৫২) ও তুহিন মিয়া (২৫)। এ ঘটনায় আহত রায়হান উদ্দিন মিয়া (৬৫), আনিস মীর (২০), গোলাম রসুল বিপ্লব (৩০), গোলাম মওলা (৩০) ও আবুল কালাম (৩৫) ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অপরদিকে আনিস মিয়া (২৪), ফারুক মাতুব্বর (৪০), চুন্নু মিয়া (৪৮), সুমন মিয়া (২৮) ও বাবলু মিয়াকে নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। হতাহতরা সবাই কাইচাইল মধ্যপাড়া মাদ্রাসা এলাকায় বাসিন্দা।
স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ জানায়, কাইচাইল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) বর্তমান চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কবির হোসেন ওরফে ঠান্ডুর সঙ্গে তাঁর চাচাতো ভাই যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হানিফ মিয়া ওরফে হৃদয়ের বিরোধ চলছিল। এ বিরোধকে কেন্দ্র করে প্রায়ই ওই দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হচ্ছে। এরই জের ধরে ২০১৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে হানিফের সমর্থক মহিদুলকে হত্যা করেন ঠান্ডুর সমর্থকরা। এই ঘটনায় ঠান্ডু ও তাঁর সমর্থকদের মামলায় আসামি করা হয়। এতে বিরোধ আরো বাড়ে।
সংঘর্ষের ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান কবির হোসেন বলেন, হানিফ মিয়া ও তাঁর ভাই জেলা মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপজেলা যুবলীগের প্রচার সম্পাদক হাসান মিয়া আজ একটি মাইক্রোবাসে করে এলাকায় আসেন। তাঁরা স্থানীয় মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে কোরবানির আয়োজন নিয়ে পরামর্শরত তাঁর সমর্থকদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে পালিয়ে যান। এ ঘটনায় তাঁর দুই সমর্থক নিহত এবং আটজন আহত হন।
তবে হানিফ ও হাসান মিয়ার পক্ষের লোকজন দাবি করেছেন, ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গে বিরোধের কারণে তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে এলাকা ছাড়া। হানিফ মিয়া হৃদয় ও তাঁর ভাই হাসান মিয়া ঈদুল আজহা উপলক্ষে ঢাকা থেকে মাইক্রোবাস নিয়ে শনিবার বিকেল ৫টায় কাইচাইল মধ্যপাড়া মাদ্রাসা এলাকায় প্রবেশ করেন। এ সময় কবির হোসেন ঠান্ডুর চাচা রওশন, রুস্তম, রায়হান, মাওলা ও বিপ্লবসহ ১০ থেকে ১২ জন লোক তাঁদের বাধা দেন এবং গাড়িতে হামলা চালান। একপর্যায়ে হানিফ মিয়া তাঁর কাছে থাকা পিস্তল দিয়ে এলোপাতারি গুলি চালিয়ে পালিয়ে যান। এতে কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হন। তাদের উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের কর্ত্যবরত চিকিৎসক শাহিন মামুন রওশন আলী মিয়া ও তুহিন মিয়াকে মৃত ঘোষণা করে।
এঁদের মধ্যে রওশন আলী মিয়া ফরিদপুর শহরের অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপক ছিলেন বলে পরিবারের লোকজন জানিয়েছেন।
এ ঘটনার পর থেকে কাচাইল এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। আবার বড় ধরনের সহিংস ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করেছে স্থানীয় লোকজন।
গুলিবিদ্ধ হয়ে দুজন নিহতের বিষয় নিশ্চিত করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামাল পাশা জানান, ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। গুলি করে হত্যার ঘটনায় তিনজনকে আটক করা হয়েছে।