কর্মস্পৃহা বাড়াতে দুদক কর্মকর্তাদের পদোন্নতি হচ্ছে : ইকবাল মাহমুদ
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, ‘দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মকতাদের কর্মস্পৃহা বৃদ্ধিতে পদোন্নতির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এতে নতুন উদ্যমে তারা দুর্নীতি প্রতিরোধে নিজেদের আত্মনিয়োগ করতে পারবে।’
আজ শনিবার দুদকের প্রধান কার্যালয়ের অডিটরিয়ামে জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল (এনআইএস) ও দুর্নীতি প্রতিরোধ কার্যক্রম বাস্তবায়ন বিষয়ক কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দুদক চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মকতাদের পদোন্নতি দেওয়া হচ্ছে, যাতে তাদের কর্মস্পৃহা আরো বিকশিত হয় এবং নতুন উদ্যমে দুর্নীতি প্রতিরোধে নিজেদের দৃঢ়ভাবে আত্মনিয়োগ করে।’ দুর্নীতি প্রতিরোধে পিছিয়ে আসার কোনো সুযোগ নেই উল্লেখ করে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে কর্মকর্তারাই মুখ্য ভূমিকা পালন করবেন। তাই মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের দুর্নীতি প্রতিরোধে নিবিড়ভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।’
চেয়ারম্যান বলেন, ‘এই কাজে স্থানীয় জেলা প্রশাসনসহ অন্যান্য বিভাগ বা সংস্থার সহযোগিতার প্রয়োজন হলে তাদের সহযোগিতা নিয়ে সমন্বিতভাবে দুর্নীতি প্রতিরোধে কাজ করতে হবে। কমিশনের প্রতিরোধমূলক কার্যক্রম হবে অন্তর্ভুক্তিমূলক। কমিশন নৈতিকমূল্যবোধ সম্পন্ন মানুষের প্লাটফরম হিসেবে কাজ করবে। সবাই একই ছাতার ছায়ায় থেকে তৃণমূল পর্যায়ে দুর্নীতি প্রতিরোধ কার্যক্রম ছড়িয়ে দেবেন।’
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘দুর্নীতি দমন কমিশন সীমিত সাধ্যের মধ্যেও প্রায় ২৮ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তরুণ প্রজন্মের মধ্যেসততা ও নৈতিক মূল্যবোধ বিকশিত করা লক্ষ্যে বহুমাত্রিক কার্যকক্রম পরিচালনা করছে। উত্তম চর্চার বিকাশে এই কোমলমতি শিক্ষার্থীরা বিতর্ক প্রতিযোগিতাসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে নিজেদের স্বল্প সময়ের জন্য হলেও এ জাতীয় উত্তম চর্চামূলক কাজে নিয়োজিত রাখছে।’
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘সমাজে সাইবার ক্রাইমের মতো সাইবার দুর্নীতিও রয়েছে। এ জাতীয় দুর্নীতি দমনে বিচারিক কার্যক্রমে ইলেকট্রনিক রেকর্ডকে সাক্ষ্য প্রমাণ হিসেবে ব্যবহারের লক্ষ্যে সাক্ষ্য আইন-১৮৭২ যুগোপযোগী করার জন্য দুদক সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছে।’ এই আইনটি সংশোধন করা না হলে ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে যেসব দুর্নীতি হচ্ছে, সেসব মামলা পরিচালনা করতে কমিশনকে অসুবিধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
কর্মশালায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব এন এম জিয়াউল আলম বলেন, ‘দেশের সরকারি প্রতিটি ওয়েব সাইটে দুদকের অভিযোগ কেন্দ্রের টোল ফ্রি হটলাইন -১০৬ প্রদর্শিত হচ্ছে।’ সরকারি ব্যবস্থাপনায় ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাবও তৈরি করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
কর্মশালায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপসচিব খন্দকার সাদিয়া আরফিন জাতীয় শুদ্ধাচার বাস্তবায়নে দুদকের করণী সম্পর্কে একটি পেপার উপস্থাপন করেন।
কর্মশালায় দুদক সচিব বলেন, ‘শুদ্ধাচার কৌশল বাস্তবায়নে দুদক দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।’ ছুটির দিনে আইসিটি বিভাগের সচিব এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে অংশগ্রহণমূলক কর্মশালা সফল হওয়ায় তিনি তাদের কমিশনের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানান। এই কর্মশালায় দুদকের আটটি বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক ও ২২টি সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালকগণ অংশগ্রহণ করছেন।
কর্মশালায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন দুদকের প্রতিরোধ অনুবিভাগের মহাপরিচালক সারোয়ার মাহমুদ, প্রশিক্ষণ ও আইসিটি অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ কে এম সোহেল প্রমুখ।