জামালপুরের সেই ডিসি ওএসডি, নতুন ডিসি এনামুল
জামালপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) আহমেদ কবীরকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করে ঢাকায় ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে জামালপুরের নতুন ডিসি হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রীর একান্ত সচিব (পিএস) মোহাম্মদ এনামুল হক।
আজ রোববার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার ও সিনিয়র সহকারী সচিব কে এম আল আমীন স্বাক্ষরিত পৃথক দুটি প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীরের আপত্তিকর ভিডিও ভাইরালের পর এ পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার।
আজ রোববার দুপুরে জামালপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রাজীব কুমার সরকার তাঁর দপ্তরে সাংবাদিকদের জানান, আজ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা দুটি প্রজ্ঞাপন আমরা পেয়েছি। একটি প্রজ্ঞাপনে জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীরকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বদলি করা হয়েছে। অপর প্রজ্ঞাপনে পরিকল্পনামন্ত্রীর একান্ত সচিব মোহাম্মদ এনামুল হককে জামালপুরের নতুন জেলা প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীরের আপত্তিকর ভিডিওর ওই নারীর বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বলেন, ‘তিনি আজ অনুমতি ছাড়াই অনুপস্থিত রয়েছেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জেলা প্রশাসকের ওই খাস কামরাটিও ওই অবস্থায় তালাবদ্ধ রয়েছে। কোনো মালামাল সরানো হয়নি। ঘটনার পর থেকে ওই কক্ষে আর কেউ প্রবেশ করেনি।’
গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে খন্দকার সোহেল আহমেদ নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে জামালপুরের জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীরের আপত্তিকর ভিডিওটি পোস্ট করা হয়। জেলা প্রশাসকের এমন কর্মকাণ্ডে শুক্রবার ভোর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় ওঠে। তবে শুক্রবার সকাল থেকে ওই আইডিতে আর ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়নি। কিন্তু এর মধ্যেই ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে ভাইরাল আকারে ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ে।
এদিকে এ ঘটনায় জামালপুরের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। একটি সিসি ক্যামেরার ফুটেজে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ও ৩ আগস্ট জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীরকে তার কার্যালয়ের এক নারী অফিস সহায়িকার সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় দেখা যায়। এসব বিষয়ে শুক্রবার সকালে সাংবাদিকরা বক্তব্য জানতে তাঁর বাসায় গেলে তিনি ফোনে দুপুরে প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে বক্তব্য জানাবেন বলে জানান। পরে শুক্রবার দুপুরে এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীর সার্কিট হাউজে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমি মানসিকভাবে খুবই বিপর্যস্ত অবস্থায় আছি। আপনারা আমাকে একটু সময় দেন। প্রকৃত ঘটনা জানতে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আপনারা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।’
ওই ভিডিওর বিষয়ে জানতে চাইলে আহমেদ কবীর বলেন, ‘এটি একটি সাজানো ভিডিও। একটি হ্যাকার গ্রুপ দীর্ঘদিন ধরে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে আমাকে ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা করছিল। আমি বিষয়টি গুরুত্ব দেইনি। বানোয়াট ভিডিওটি একটি ফেক আইডি থেকে পোস্ট দেওয়া হয়।’
তবে ভিডিওটিতে দেখানো কক্ষটি তার অফিসের বিশ্রাম নেওয়ার কক্ষ এবং ভিডিওর ওই নারী তাঁর কার্যালয়ে অফিস সহায়ক হিসেবে কর্মরত বলে তিনি নিশ্চিত করেন। এ সময় জেলা প্রশাসক সাংবাদিকদের এ বিষয়ে সংবাদ পরিবেশন না করার জন্য অনুরোধ করেন।