বাংলাদেশের বাইরের বৈধ আয় থেকেই আয়-ব্যয় হয়েছে
বিকল্পধারা বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব ও সংসদ সদস্য মাহী বি চৌধুরী বলেছেন, ‘জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন আর মানি লন্ডারিংয়ের সুযোগ নেই। বাংলাদেশের বাইরে যদি কোনো আয়-ব্যয় থাকে তা বাংলাদেশের বাইরের বৈধ আয় থেকেই হয়েছে।’
যুক্তরাষ্ট্রে অর্থপাচার ও জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রধান কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন মাহী বি চৌধুরী।
মাহী বলেন, ‘দুদক আমাকে তলব করেছে বলে আমি অভিযুক্ত তবে এখনো দোষী না। অনেক সময় আমাদের ধৈর্য ধারণ করতে হয় রাজনীতির কারণে। ধৈর্য ধারণ করলে সত্য উদঘাটিত হবে।’
আজ রোববার সকাল সোয়া ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত মাহীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন অনুসন্ধান কর্মকর্তা দুদক উপপরিচালক জালাল উদ্দিন আহাম্মদ।
মাহী বি চৌধুরী বলেন, ‘একটি অভিযোগ এসেছে আমার নামে, সেই অভিযোগের প্রাথমিক তদন্ত করছে দুদক। সেই অভিযোগের সত্যতা যাচাই করার জন্য আমার বক্তব্য নেওয়া প্রয়োজন ছিল। সেজন্য দুদক আমাকে ডেকেছে, আমি আমার বক্তব্য দিয়েছি। আগামী ২৭ কিংবা ২৮ তারিখে আমি আমার পুরো বক্তব্য সংবাদ মাধ্যমে খোলাসা করব।’
মাহী বলেন, ‘আমি মনে করি দুদকে যেহেতু অভিযোগ এসেছে, দুদক প্রকৃত অথরিটি। সত্য উদঘাটনের জন্য সময় দরকার। আমার কাছে দুদক যেসব তথ্য চেয়েছে সেগুলো আমি দেব। দুদক তার মতো কাজ করবে, এর পাশাপাশি আমার কিছু কাজ করতে হবে। পরবর্তী সময়ে সংবাদ সম্মেলনে সব বলব। অভিযোগে সত্যতা কতটুকু, এর পেছেনে কী ষড়যন্ত্র রয়েছে তা বলব।’
নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে পারবেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে মাহী বি চৌধুরি বলেন, ‘নির্দোষ প্রমাণ করার কিছু নেই, আমি নির্দোষ, এটা আপনারা দেখতে পাবেন।’
হয়রানি করা হচ্ছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে মাহী বলেন, ‘না না, হয়রানির কিছু নেই। গত ২৫ দিন ধরে আমি চুপচাপ আছি। যা ইচ্ছে এক তরফাভাবে বলা হচ্ছে। এও দেখেছি যে ঘুরে ঘুরে হকার, ব্রোকার বলে বেড়াচ্ছে গরম খবর, গরম খবর-মাহী চৌধুরীর ছয় বাড়ি! এগুলো আমাদের পলিট্রিক্যাল ট্রায়ালে বেশি হয়।’
মাহী বলেন, ‘যিনি অভিযোগ করেন তার ওপরই দায়িত্ব বর্তায় অভিযোগ প্রমাণের। অভিযোগ আসার সাথে সাথেই যদি মিডিয়া ট্রায়াল হয়ে যায়, তাহলে যারা শুধু ষড়যন্ত্রের রাজনীতি বিশ্বাস করে তারা এগুলো প্রচার করে অন্যভাবে। এ অভিযোগগুলো নির্বাচনের আগে থেকে আসা শুরু হয়েছে। আমি দেখেছি, এগুলো মোটামুটি একই অভিযোগ। দুর্নীতি দমন কমিশনকে সঠিকভাবে কাজ করতে দেওয়া না হলে বাংলাদেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা পাবে না।’
একই অভিযোগে তলব করা হলেও হাজির হননি মাহী বি চৌধুরীর স্ত্রী আশফাহ হক। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমার স্ত্রী অসুস্থ। আমি আমার স্ত্রীকে রিপ্রেজেন্ট করি। আমি এসেছি এটাই যথেষ্ট বলে আমি মনে করি।’
গত ৭ আগস্ট তাদের তলব করে দ্বিতীয় দফায় চিঠি দেয় সংস্থাটি। তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহে আরো সময় চেয়ে মাহী দম্পতির আবেদনের বিপরীতে ১৮ দিন সময় দিয়ে আজ উপস্থিত হয়ে বক্তব্য দেওয়ার জন্য ফের তলবি নোটিশ পাঠিয়েছিল দুদক।
এর আগে গত ২৮ জুলাই দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে সাবেক রাষ্ট্রপতি ড. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর ছেলের গুলশানের বারিধারার (রোড নং ১২, বাড়ি ১৯) ঠিকানায় তলবি নোটিশ পাঠানো হয়। যেখানে তাদের ৭ আগস্ট সকাল সাড়ে ১০টায় হাজির হতে বলা হয়েছিল।
মাহী বি চৌধুরী ও তার স্ত্রী আশফাহ হকের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে অর্থ পাচারের মাধ্যমে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। চলতি বছরের জুন মাসে তাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক।