ডেঙ্গুতে গাজীপুরের স্কুলছাত্রের মৃত্যু, কাউন্সিলর ও তাঁর বোন এখন সুস্থ
গাজীপুরের এক স্কুলছাত্র ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মঙ্গলবার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। এদিকে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডের এক কাউন্সিলর ও তাঁর বোন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ১৩ দিন চিকিৎসা নিয়েছেন।
মৃত ওই স্কুলছাত্রের নাম জিসান (১৮)। সে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সামন্তপুর এলাকার মো. বিল্লাল হোসেনের ছেলে। জিসান স্থানীয় ছোট দেওড়া অগ্রণী উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণিতে পড়ত।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. শাহজাহান মিয়া ও জিসানের বাবা মো. বিল্লাল হোসেন জানান, প্রায় ১৮ দিন ধরে ডেঙ্গুতে ভুগছিল জিসান। গত ২৩ আগস্ট তাকে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকের পরামর্শে সোমবার সন্ধ্যায় সেখান থেকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে জিসান মারা যায়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দেওয়া ডেথ সার্টিফিকেটে জিসানের মৃত্যুর কারণ ডেঙ্গু বলেই উল্লেখ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) প্রণয় ভূষণ দাস জানান, গত ২৩ আগস্ট জ্বর নিয়ে জিসান এ হাসপাতালে ভর্তি হয়। তার দেহে ফুসফুসে সংক্রমণের সঙ্গে রক্তের প্লাটিলেটও কমতে থাকায় তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়। ২৫ আগস্ট তার রক্তে প্লাটিলেটের সংখ্যা ছিল ৮৯ হাজার। ২৬ আগস্ট এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল ৬৩ হাজারে। এতে ধারণা করা হচ্ছে জিসান ডেঙ্গু এবং নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ছিল। তবে ডেঙ্গু ছাড়াও অন্য ভাইরাসের আক্রমণেও রক্তে প্লাটিলেট কমে যেতে পারে।
এদিকে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় ১০ জনসহ মোট ৩১ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছেন। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের এক নারী কাউন্সিলর ও তাঁর বোন ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ১৩ দিন চিকিৎসা নেওয়ার পর বাসায় ফিরেছেন।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৩৪, ৩৫ ও ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পুষ্প আক্তার মায়া জানান, ঈদের আগের দিন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা নিশ্চিত হওয়ার পর আমি ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হই। ঈদের ছুটিতে বেড়াতে এসে আমার ছোট বোন শাকিলা আক্তার মুক্তার ডেঙ্গু ধরা পড়ে। পরে একইদিন তাঁকেও আমার সঙ্গে ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে ১৩ দিন চিকিৎসা নেওয়ার পর আমরা গত রোববার বাসায় ফিরি। বর্তমানে অনেকটা সুস্থ হলেও পুরোপুরি সুস্থ নই।
শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আরএমও প্রণয় ভূষণ দাস জনান, গত ২৪ ঘণ্টায় ১০ জনসহ বর্তমানে ৩১ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছেন। এ পর্যন্ত এ হাসপাতালে ৪৮৪ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে ১৮ জনকে ঢাকাসহ বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। গাজীপুরে এখনো ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে আসছে। তবে আগের চেয়ে গাজীপুরে ডেঙ্গুর প্রকোপ কিছুটা কমেছে।