‘দখলমুক্ত হবে ইছামতী’
পাবনায় শুরু হয়েছে ইছামতী নদীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান। গতকাল সোমবার বিকেলে জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদের নেতৃত্বে নদীর উৎসমুখের তিনটি ইটভাটাসহ বেশ কয়েকটি পাকা স্থাপনা উচ্ছেদ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ। এর ফলে পাবনা শহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত ইছামতী নদী প্রাণ ফিরে পাবে বলে আশা করছেন এলাকাবাসী।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পাবনা শহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত ইছামতী নদী এখন দূষণ ও ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। ৫৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এ নদীর অধিকাংশ জায়গা এখন প্রভাবশালীদের দখলে। নদীর উৎসমুখ বন্ধ করে সেখানে গড়ে তোলা হয়েছে বেশ কয়েকটি অবৈধ ইটভাটাসহ পাকা স্থাপনা। এ ছাড়া শহরের দুপাশে পাঁচ শতাধিক কাঁচা-পাকা স্থাপনা তৈরি করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়িঘর গড়ে তোলা হয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে নদীটি দখলমুক্ত করে খননের দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন জেলার মানুষ। এদিকে পাবনার পক্ষ থেকে ইছামতী নদী উদ্ধারে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানকে সাধুবাদ জানানো হয়েছে।
জানা গেছে, পাবনার জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড গতকাল বিকেল থেকে যৌথ অভিযান শুরু করে। এ সময় নদীর উৎসমুখ পাবনা সদর উপজেলায় চরশিবরামপুর স্লুইসগেট এলাকার সিরাজুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তির অবৈধ তিনটি ইটভাটা, দুটি পাকা ভবন, তিনটি টিনশেডসহ অন্যান্য অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। পাবনার জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী কে এম জহুরুল হক, জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বায়জিত বিন আকন্দ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আহসান হাবিব শাওন ও পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত থেকে এ অভিযান পরিচালনা করেন।
উচ্ছেদ অভিযান শুরুর পর অবৈধ দখলদারদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়। অনেকেই নিজ নিজ অবৈধ স্থাপনা নিজেরাই ভেঙে নিয়ে গেছেন বলে জানা গেছে। এ সময় ইটভাটা, নদীতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী রাস্তা, বাঁধ ও দালান গুঁড়িয়ে দেয় প্রশাসন।
পাবনার জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী, সারা দেশে সব নদী সচল করার চলমান উদ্যোগের অংশ হিসেবে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান চলছে। পাবনাতেও ইছামতী নদী উদ্ধারে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে ব্যতিক্রম ঘটবে না। আপাতত নদীর উৎসমুখে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী সব স্থাপনা অপসারণ করা হচ্ছে। ধারাবাহিকভাবে নদীর দুপাড়ের অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করা হবে।’
তবে ইটভাটা ও পাকা ভবনের মালিক সিরাজুল ইসলাম অভিযোগ করেন, তাঁকে কোনো নোটিশ না দিয়েই তিনটি অবৈধ ইটভাটা, দুটি দোতলা পাকা ভবন ও তিনটি টিনশেড গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে তাঁর বিপুল টাকার ক্ষতি হয়েছে।