মহাসড়ক থেকে টোল আদায় গণবিরোধী সিদ্ধান্ত : রিজভী
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘মহাসড়ক থেকে টোল আদায় করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ গণবিরোধী সিদ্ধান্ত। জনগণের পকেট কাটতেই এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে সরকার। টোলের টাকা তো যাত্রীদের পকেট থেকেই দিতে হবে। এটা জনগণকে ট্যাক্সবন্দি করার নতুন ফন্দি। এতে যানজটের তীব্রতা আরো বাড়বে, সময়ও নষ্ট হবে।’
আজ শুক্রবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন রিজভী।
রিজভী বলেন, ‘দেশের মহাসড়কগুলো তো টোল আদায়ের জন্য উপযুক্তই না। সারা দেশের অধিকাংশ রাস্তা খানাখন্দে ভরা। মহাসড়কগুলো বেহাল। এসব কারণে সড়কে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে। সড়কে টোল আদায় করলে বাস ভাড়া আরো বাড়বে। এমনিতেই পরিবহন মালিকরা সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি ভাড়া নেন, তার ওপর এখন টোলের টাকাও যাত্রীদের কাছ থেকে ওঠানো হবে।’
রিজভী আরো বলেন, ‘সরকার নিজেরা টাকা ওঠালে সেখানে দুর্নীতির কারণে নয়ছয় হয়। আবার ইজারা দিলে খাতিরের লোকজনকে নামমাত্র মূল্যে দেওয়া হয়। ফলে সরকারি কোষাগারে খুব বেশি টাকা জমা পড়ে না। অন্যদিকে টোল প্লাজা পার হতে যদি প্রতিটি গাড়ির পাঁচ মিনিট করেও সময় লাগে, তারপরও শুধু ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পাঁচ লাখ মিনিট সময় মানুষের জীবন থেকে হারিয়ে যাবে। পাশাপাশি টোল আদায়ের সময় গাড়ির অতিরিক্ত তেল পুড়লে তার টাকাও আদায় হবে জনগণের কাছ থেকেই। সুতরাং টোলের খড়গ নেমে আসবে জনগণের কাঁধেই।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বর্তমান মিডনাইট সরকার মুখে টাইটানিক মার্কা উন্নয়নের বুলি কপচালেও মূলত লুটপাটের নীতিতে দেশ চালাচ্ছে। জনগণকে নানা ট্যাক্সের মধ্যে বন্দি করে ফেলেছে। সিটি ও পৌরকর কীভাবে বাড়ানো হয়েছে, সেটাও আপনারা দেখেছেন। একটা ট্রেড লাইসেন্স নিতে গেলে এখন পাঁচ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা গুনতে হচ্ছে। বাড়ির হোল্ডিং ট্যাক্স বাড়িয়েছে বহুগুণ। গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানির বিল কয়েক বছরে বাড়িয়েছে ১০ গুণেরও বেশি। মানুষ মোবাইলে কথা বলবে, সেখান থেকেও টাকা কেটে নিচ্ছে সরকার। সত্যিকার অর্থে এ সরকার সারা দেশে লুটপাট চালিয়ে দেশকে ফোকলা করে ফেলেছে।’
রুহুল কবির রিজভী আরো বলেন, ‘জামিনে থাকলেও জামিন বাতিল করে আবারও কারাগারে পাঠানো হয়েছে দেশের প্রথিতযশা আইনজীবী, সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সভাপতি ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে। আমি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে তাঁর মুক্তি দাবি করছি।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিন, সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, মাহবুবুল হক নান্নু, সহপ্রচার সম্পাদক আসাদুল করিম শাহীন, নির্বাহী সদস্য আমিনুল ইসলাম ও অ্যাডভোকেট আবেদ রাজা প্রমুখ।