ভৈরবে গৃহকর্মী নির্যাতনের ঘটনায় স্বামী-স্ত্রী গ্রেপ্তার
কাঁচের চুড়ি ভেঙে ফেলায় কিশোরগঞ্জের ভৈরবে সাদিয়া (১৮) নামের এক গৃহকর্মীকে নির্যাতনের ঘটনায় তানভীর রাফসান সাদলি ও মেহেরুন্নেছা অপি দম্পতিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বর্তমানে নির্যাতিতা সাদিয়া ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
ভৈরব থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. বাহালুল খান বাহার জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর মঙ্গলবার দিবাগত মধ্যরাতে অভিযুক্ত স্বামী ও স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন এ পুলিশ কর্মকর্তা।
নির্যাতিত সাদিয়া জানান, সাত বছর আগে তাঁর এক খালার মাধ্যমে ভৈরব বাজারের তানভীর রাফসান সাদলির বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ নেন। কিছুদিন যাওয়ার পর থেকেই তুচ্ছ ঘটনায় যখন তখন তাঁকে মারধরসহ প্রায়ই নির্যাতন কর গৃহকর্ত্রী মেহেরুন্নেছা অপি। অনেক সময় হাত-পা বেঁধে মারধর করতেন। তাঁকে বাসার বাইরে এমনকি বাড়িতেও যেতে দিতেন না। তাঁরা বাসার বাইরে গেলে তাঁকে তালাবদ্ধ করে রেখে যেতেন।
সাদিয়া আরো জানান, গত সোমবার বিকেলে বাসার ওয়্যারড্রপ পরিষ্কার করার সময় অসতর্কতায় তাঁর হাতের ধাক্কা লেগে চুড়ি রাখার আলনা মেঝেতে পড়ে যায়। এতে কাঁচের চুড়ি ভেঙে যাওয়ায় তাঁর ওপর চড়াও হন গৃহকর্ত্রী অপি। প্রথমে লাঠি দিয়ে তাঁকে বেধরক পিটিয়ে আহত করেন। পরে ছুরি দিয়ে আঘাত করে চোখের উপর গুরুতর জখম করা করেন। এ ছাড়া লাঠিপেটার পর সাদিয়ার শরীরে গরম পানি ঢেলে দেন।
বাসায় এসে গৃহকর্তা তানভীর রাফসান সাদলি চুড়ি ভাঙার ঘটনা শুনে তিনিও সাদিয়াকে আরেকদফা লাঠিপেটা করেন। এসব নির্যাতনের পর তাঁকে বাসায় আটকে রাখেন তাঁরা। দেননি কোনো চিকিৎসাসেবাও।
মঙ্গলবার রাতে গোপনে সদিয়া বাসা থেকে পালিয়ে খালার ভৈরবপুরে বাসায় আশ্রয় নেন। ঘটনা শুনে তাঁর খালা তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন। খবর পেয়ে রাতেই পুলিশসহ গণমাধ্যমকর্মীরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছুটে গেলে নির্যাতিত সাদিয়া তাঁর ওপর চালানো নির্যাতনের বর্ণনা দেন।