নেত্রকোনায় অটোচালক সাইদুল হত্যায় তিনজনের জবানবন্দি
নেত্রকোনার দুর্গাপুরের চাঞ্চল্যকর অটোচালক সাইদুল ইসলাম (২৭) হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার তিন আসামি আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে আসামিদের নেত্রকোনা জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে আসামিরা হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।
তিন আসামি হলেন ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার কাঁঠালডাংড়ি গ্রামের শাহীন ওরফে মোল্লা (৩৫), শেরপুরের সদর উপজেলার পাকুরিয়া গণই মমিনাকান্দা গ্রামের মানিক মিয়া (২৭) ও নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের সেকুল ইসলাম (২৭)।
নেত্রকোনার পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সী আজ বুধবার বিকেলে তাঁর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, দুর্গাপুরের পশ্চিম বিলাশপুর গ্রামের অটোচালক সাইদুল ইসলাম গত ২ সেপ্টেম্বর সকালে প্রতিদিনের মতো তাঁর ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। রাতে তিনি বাড়িতে ফিরে না আসায় ও তাঁর মোবাইল বন্ধ থাকায় স্ত্রীসহ পরিবারের লোকজন চারদিকে খোঁজাখুজি শুরু করে। তাঁকে কোথাও খুঁজে না পেয়ে তাঁর স্ত্রী ৩ সেপ্টেম্বর দুর্গাপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
পরে ৫ সেপ্টেম্বর দুর্গাপুরের মিনকি ফান্দা সাকিনের মরাখলা পাহাড়ের পাশে স্থানীয়রা বান্দরের টিলা পাহাড়ের আনুমানিক ৪০ ফুট ওপরে দুর্গম জঙ্গলে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তির লাশ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয়। দুর্গাপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে হাত-পা ও মুখমণ্ডল পরনের শার্ট ও প্যান্ট দিয়ে বাঁধা অবস্থায় অর্ধগলিত এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে। মৃত ব্যক্তির পরনের প্যান্ট ও শার্ট দেখে স্বজনরা লাশ শনাক্ত করে। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী আকলিমা আক্তার গত রোববার দুর্গাপুর থানায় একটি মামলা করেন।
মামলার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ তদন্তে নামে। তদন্তকালে শাহীন ওরফে মোল্লা, মানিক মিয়া ও সেকুল ইসলামের নাম উঠে আসে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এসএম আশরাফুল আলমের নেতৃত্বে জেলা পুলিশের একটি টিম তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে গত সোমবার প্রথমে সেকুলকে দুর্গাপুরের লক্ষ্মীপুর বাজার থেকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাঁকে নিয়ে অভিযান চালিয়ে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার উঁচাখিলা বাজার থেকে আসামি সবুজ মিয়াকে গ্রেপ্তার ও তাঁর হেফাজতে থাকা চোরাই ইজিবাইকটি জব্দ করে। পরে মোল্লা ও মানিকের দেওয়া তথ্যমতে ওইদিন গভীর রাতে শেরপুর সদর উপজেলার পাকুরিয়া গণই মমিনাকান্দা থেকে হত্যাকাণ্ডের মাস্টার মাইন্ড মানিক মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়।