থানায় ধর্ষকের সঙ্গে বিয়ে : ওসি প্রত্যাহার, এসআই বরখাস্ত
‘গণধর্ষণের শিকার’ গৃহবধূকে থানার ভেতরে ‘ধর্ষকের’ সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার ঘটনায় পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবাইদুল হককে পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকায় উপপরিদর্শক (এসআই) একরামুল হককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
এ ছাড়া এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে দায়ের করা মামলার এজাহারভুক্ত হোসেন আলী ও সঞ্জু নামের আরো দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। এ নিয়ে মামলার মোট চার আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় পাবনার পুলিশ সুপার (এসপি) শেখ রফিকুল ইসলাম নিজের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
পাবনা সদর উপজেলার দাপুনিয়া ইউনিয়নের সাহাপুর যশোদল গ্রামে স্বামী ও তিন সন্তান নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন ‘গণধর্ষণের শিকার’ গৃহবধূ। গত ২৯ আগস্ট রাতে একই গ্রামের আকবর আলীর ছেলে রাসেল আহমেদ চার সহযোগীকে নিয়ে তাঁকে কৌশলে অপহরণ করে নিয়ে যায়। টানা চার দিন অজ্ঞাত একটি জায়গায় আটকে রেখে তাঁকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে রাসেল ও তার সহযোগীরা।
গৃহবধূ কৌশলে পালিয়ে এসে স্বজনদের বিষয়টি জানালে তাঁরা ৫ সেপ্টেম্বর তাঁকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে তিনি (গৃহবধূ) নিজেই বাদী হয়ে পাবনা সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে পুলিশ ধর্ষক রাসেলকে আটক করে। তবে বিষয়টি মামলা হিসেবে এজাহারভুক্ত না করে পুলিশ তাঁকে থানায় ডেকে নিয়ে যায়। পরে সেখানে তাঁকে আগের স্বামীকে তালাক দিয়ে অভিযুক্ত রাসেলকে বিয়ে করতে বাধ্য করা হয়।
আজকের সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার বলেন, গৃহবধূকে গণধর্ষণের পর মামলা না নিয়ে ধর্ষকের সঙ্গে বিয়ের ঘটনাটি গণমাধ্যমে প্রচারিত হলে পুলিশ তদন্তে নামে। তদন্ত কমিটির রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে তাৎক্ষণিকভাবে থানায় ধর্ষণ মামলা করার নির্দেশ দেওয়া হয়। পরে এ মামলায় আসামি রাসেল ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা শরিফুল ইসলাম ঘণ্টুকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ নিয়ে মামলার পাঁচ আসামির চারজন গ্রেপ্তার হয়েছে। তাদের মধ্যে রাসেল ও হোসেন আলী ১৬৪ ধারায় ধর্ষণের স্বীকোরোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।