জোটসঙ্গী জাপা রংপুরের আসন চাইলে ভেবে দেখবে আ.লীগ
বিরোধীদলীয় নেতা এইচ এম এরশাদের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া রংপুর-৩ আসনটি উপনির্বাচনে জাতীয় পার্টি (জাপা) মহাজোটগতভাবে চাইলে আওয়ামী লীগ বিবেচনা করতে পারে বলে জানিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর বনানীর সেতু ভবনে পদ্মা সেতুর রক্ষণাবেক্ষণে কোরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে করপোরেশনের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
রংপুর-৩ আসনে আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেবে কি না জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘রংপুরের আসনটি আসলে জোটের নিয়ম অনুযায়ী জাতীয় পার্টির ছিল, এরশাদ সাহেবের আসন। জোটগত সিট বণ্টনে এটা জাতীয় পার্টির ছিল। এখন জাতীয় পার্টি সংসদে বিরোধী দলের আসনে। এখন তারা স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে এলে আসতে পারে, সেটা তাদের ব্যাপার।’
‘আর যদি জোটগতভাবে আমাদের কাছে আসনটি চান, সেটা আমাদের দেওয়া হোক। জোটে এই আসনটি আমাদের ছিল। তখন আমরা বিবেচনা করব। এই মুহূর্তে আমাদের প্রার্থী আছে। যতক্ষণ না পর্যন্ত আলোচনা হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত কিছু বলা যাচ্ছে না। আলাপ-আলোচনা করে আমরা যদি মনে করি...। এ মুহূর্তে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। তাঁরাও কোনো আবেদন করেননি। তাই এ ব্যাপারে কিছু বলা যাচ্ছে না।’
মহাসড়কের চাঁদাবাজির পাশাপাশি টোল আদায় বাড়তি ভোগান্তির কারণ হবে কি না জানতে চাইলে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘আগে যেতেন চার ঘণ্টায়, এখন যাচ্ছেন তিন ঘণ্টায়, সময় বাঁচবে; এখানে লসের কোনো কারণ নেই। আর সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হলো, এটা চুক্তি পর্যন্ত গড়াতে অনেক সময় লাগবে। এখনো টোলের বিষয়টি নির্ধারণই হয়নি। কাজেই এটা ডাবল কি ট্রিপল হবে, কী করে এটা অনুমান করে লিখব? টোল নির্ধারণের প্রাথমিক কোনো আলাপ-আলোচনা পর্যন্ত হয়নি। কাজেই এ নিয়ে আগাম মন্তব্যের কোনো কারণ নেই। এর কোনো বাস্তবতা নেই, কোনো কারণও নেই।’
টোল নিয়ে বিএনপির অভিযোগের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মহাসড়ক করার কোনো অভিজ্ঞতা তো বিএনপির নেই। যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন চার লেনের কোনো রাস্তাই ছিল না। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল এসব তাঁরা স্বপ্নেও দেখেননি। এ দেশে সড়ক অবকাঠামোর যে উন্নয়ন হয়েছে, এসবের বিষয় তাদের কোনো অভিজ্ঞতা নেই। অন্যান্য দেশে টোল আদায় হয়, এটা তাঁরা জেনেও না জানার ভান ধরছেন। রাস্তা করতে হলে তো রাস্তা ব্যবহার উপযোগী রাখতে হয়, রাস্তার তো মেইনটেন্যান্স আছে।’
বিএনপির আন্দোলনের হুমকিকে কীভাবে দেখছেন জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ আন্দোলনে ভয় পায় না। আওয়ামী লীগ আন্দোলনকে মোকাবিলা করেই ক্ষমতায় এসেছে। আন্দোলন শান্তিপূর্ণভাবে করলে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু আন্দোলনের নামে সহিংসতা, বিশৃঙ্খলা করলে সমুচিত জবাব দেওয়া হবে।’
আসামের বিষয়ে সরকারের কোনো উদ্বেগ আছে কি না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ভারত সরকারে কাছে যখন তাদের মন্তব্য জানতে চাই, তারা আসলে কী করতে চায়। তখন ভারত সরকারের পক্ষ থেকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকায় বলে গেছেন, ওখান থেকে আমরা যেটা পেলাম, এ নিয়ে বাংলাদেশের উদ্বেগের কোনো কারণ নেই। তবে আমরা পরিস্থিতি অবজার্ভ করছি। বিচ্ছিন্নভাবে ভারতের কে কী বক্তব্য দিল, সেটা আমাদের কাছে বিবেচ্য নয়। ভারত সরকার আমাদের কী বলেছে, সেটাই বিবেচ্য বিষয়। বিষয়টা এখনো আপিলের পর্যায়ে আছে। আরো চার মাসের মতো সময় লাগবে। এটা যাচাই-বাছাই পর্যায়ে রয়েছে। এটা নিয়ে শেষ কথা বলার মতো সময় এখনো আসেনি।’
ছাত্রলীগের সংকট নিরসন কীভাবে হচ্ছে—জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমি এ নিয়ে আর কোনো কথা বলব না। কারণ প্রধানমন্ত্রী আমাদের সভাপতি দেশরত্ন শেখ হাসিনা বিষয়টি দেখছেন। এ নিয়ে আর কোনো মন্তব্য নেই। আমি একটা বিষয় বুঝি না, একটা ছাত্র সংগঠন নিয়ে এত লেখালেখি কি দেশের অন্যান্য বিষয়ের চেয়ে বেশি প্রাধান্য পায়?’