বিয়ে ও ডিভোর্স নিয়ে জানতে চেয়েছে পুলিশ : শিমলা
চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ ছিনতাই চেষ্টার ঘটনায় নিহত পলাশ আহমেদ মাহাদীর সাবেক স্ত্রী চিত্রনায়িকা শিমলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ।
জিজ্ঞাসাবাদের ব্যাপারে চিত্রনায়িকা শিমলা সাংবাদিকদের বলেন, ‘উনারা আমার কাছে জানতে চেয়েছেন বিয়েটা কীভাবে ও ডিভোর্সটা কীভাবে হয়েছে। দ্যাটস ইট।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কাউন্টার টেররিজম ইউনিট কার্যালয়ে শিমলাকে ডাকা হয়। সেখানে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রাজেশ বড়ুয়া চিত্রনায়িকা শিমলাকে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
বিয়েটা কীভাবে হয়েছিল সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শিমলা বলেন, ‘আমার পরিচয় হয়েছিল তারপর বিয়ে করেছি। তারপর ডিভোর্স। আমার ভালো লাগেনি এজন্য আমি ডিভোর্স দিয়েছি।’
তদন্ত কর্মকর্তা রাজেশ বড়ুয়া বলেন, ‘মামলার অনেক বিষয়ে তাঁর সঙ্গে কথা হয়েছে। যা যা চেয়েছি সব তথ্যই অভিনেত্রী শিমলা দিয়েছেন। তাঁর দেওয়া সেই তথ্যগুলো যাচাই করা করা হবে।’
২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় বাংলাদেশ বিমানের উড়োজাহাজ ‘ময়ূরপঙ্খী’র ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে দুবাই যাওয়ার কথা ছিল। বিকেলে ঢাকা থেকে ছাড়ার পর পলাশ আহমেদ মাহাদী নামের এক যাত্রী উড়োজাহাজ ছিনতাইয়ের চেষ্টা চালান। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে উড়োজাহাজটি চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করে। এরপর কমান্ডো অভিযানে নিহত হন পলাশ।
পলাশ আহমেদের বাড়ি নারায়ণগঞ্জে। চিত্রনায়িকা শিমলা তাঁর স্ত্রী ছিলেন। ২০১৮ সালের ৩ মার্চ শিমলার সঙ্গে পলাশের বিয়ে হয় এবং একই বছরের ৬ নভেম্বর তাঁদের বিচ্ছেদ হয়।
ওই ঘটনায় ২৫ ফেব্রুয়ারি বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থানায় একটি মামলা করে। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটকে। বিমান ছিনতাই চেষ্টার প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, নায়িকা শিমলার সঙ্গে বিচ্ছেদের বিরহ থেকে সাবেক স্বামী পলাশ আহমেদ বিমান ছিনতাইয়ের চেষ্টা চালায়।
উড়োজাহাজ ‘ময়ূরপঙ্খী’র যাত্রী পলাশ আহমেদ আসন পরিবর্তন করলে তাঁকে নিষেধ করেছিলেন একজন কেবিন ক্রু। আর তাতেই ক্ষিপ্ত হয়ে সঙ্গে থাকা পিস্তল বের করেন পলাশ। এ সময় পলাশ কয়েক দফা অস্থিরভাবে পায়চারি করেন। তখন ককপিটের সামনে বসা ছিলেন পাইলট ও ফার্স্ট অফিসার। পলাশ পাইলটের সঙ্গে বারবার কথা বলতে চেয়েছিলেন। তবে কেবিন ক্রুরা তাঁর মনোযোগ অন্যদিকে সরানোর চেষ্টা করেছিলেন। কেবিন ক্রু শফিকা নাসিম একটি গোপন কোড ব্যবহার করে বিষয়টি পাইলটকে জানিয়ে দেন। পাইলট ও ফার্স্ট অফিসার লাইভ স্ক্রিন অন করে সেখানে পলাশের গতিবিধি দেখতে পান।
পরে ব্যক্তিগত সমস্যা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলেন পলাশ। ওই দাবি নিয়েই এক হাতে পিস্তল এবং আরেক হাতে বিস্ফোরকসদৃশ বস্তু নিয়ে অসংলগ্ন আচরণ শুরু করেন পলাশ। যাত্রীদের রক্ষায় পাইলট এবং ক্রুরা নানাভাবে কালক্ষেপণের কৌশল নেন। এরপর উড়োজাহাজটি জরুরি অবতরণ করে চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে। নিরাপদে নামিয়ে আনা হয় যাত্রী ও বিমানকর্মীদের।