চট্টগ্রামে রোহিঙ্গাদের ভোটার করার অভিযোগে তিনজন কারাগারে
রোহিঙ্গাদের জাতীয় পরিচয়পত্রে অন্তর্ভুক্ত করার অভিযোগে নির্বাচন কার্যালয়ের আটক এক কর্মচারীসহ তিনজনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। আটক হওয়া আসামিরা হলেন চট্টগ্রাম নির্বাচন কার্যালয়ের কর্মচারী জয়নাল আবেদীন, তাঁর বন্ধু বিজয় দাশ ও বোন সীমা দাশ।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট খায়রুল আমিন তাদের তিনজনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আগামীকাল বুধবার তাদের রিমান্ড আবেদনের শুনানি করবেন।
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) কোতোয়ালি থানা পুলিশ জানায়, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন করে সিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট আটক তিনজনের সাত দিন করে রিমান্ডের আবেদন করেছে।
এদিকে, নগরীর কোতোয়ালি থানায় আজ সকালে মামলাটি দায়ের করেন ডবলমুরিং থানার নির্বাচন কর্মকর্তা পল্লবী চাকমা। এর আগে গতকাল সোমবার গভীর রাতে নির্বাচন কার্যালয়ের কর্মচারী জয়নাল আবেদীন, তাঁর বন্ধু বিজয় দাশ ও বোন সীমা দাশকে আটক করে পুলিশ।
পুলিশ তাদের থেকে ল্যাপটপ, মোবাইলসহ বিভিন্ন তথ্য উদ্ধার করেছে। মামলায় সাগর ও সত্য সুন্দর দে নামে আরো দুজনকে আসামি করা হয়েছে। তাদের ধরতে পুলিশের অভিযান চলছে।
পুলিশ জানায়, মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে জাল জালিয়াতির মাধ্যমে ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করে মানুষের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে ২০১৫ সালে নির্বাচন কমিশনের ভোটার এন্ট্রি করার সাতটি ল্যাপটপ হারিয়ে যায়। এর মধ্যে একটি ল্যাপটপ জয়নালের বন্ধু বিজয় দাশ ও তাঁর বোন সীমা দাশের হেফাজত থেকে উদ্ধার করা হয়।
চট্টগ্রামের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামান বলেন, ‘পাঁচজন রোহিঙ্গাকে কক্সবাজার থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যাদের বিরুদ্ধে এরই মধ্যে ফৌজদারি মামলা করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী আমাদের যে স্পেশাল টিম তারা গতকাল রাতে চট্টগ্রামে আসেন। এসে সিনিয়র জেলা নিবার্চন অফিস চট্টগ্রাম ও আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস চট্টগ্রামের সাথে যৌথভাবে যে তথ্যটি পেয়েছি সেগুলো যাচাই-বাছাই করে বিভিন্ন ল্যাপটপ, মোডেম, ওয়ান যেখান থেকে আমাদের কার্যক্রমগুলো পরিচালনা করে সেগুলো পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই-বাছাই করে তারা জানতে পারেন যে অত্র কার্যালয়ের একজন অফিস সহায়ক জয়নাল আবেদীন উনি এটার সাথে সম্পৃক্ত আছেন। বিষয়টি আমরা নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করলে নির্বাচন কমিশন তাৎক্ষনিকভাবে তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করার নির্দেশ দেয়। তার ধারাবাহিকতায় আমরা তাঁর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করেছি এবং আমরা তার কাছে আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস এবং জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা স্পেশাল টিম জিজ্ঞাসাবাদ করে আমাদের যে ল্যাপটপগুলো হারিয়ে গেছে তার মধ্য থেকে একটি ল্যাপটপ উদ্ধার করতে সক্ষম হই। আর এই ল্যাপটপ উনি যাদের কাছে রেখেছেন ওই দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আমাদের জিম্মায় রেখেছি। ’
এর আগে নির্বাচন কমিশনের গঠিত দুটি তদন্ত কমিটির অনুসন্ধানে কক্সবাজার থেকে দালাল সন্দেহে পাঁচজন রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়।