ভৈরবে হতদরিদ্রদের বরাদ্দের চাল গায়েব
কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার শ্রীনগর ইউনিয়নের হতদরিদ্রদের মধ্যে ১০ টাকা কেজি দরে বিতরণের জন্য উত্তোলনকৃত ২৪ বস্তা চাল গায়েব হয়ে গেছে। বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে আসায় কার্ডধারী ৩১৮টি পরিবারের মধ্যে চাল বিতরণ বন্ধ করে দিয়েছে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়। চাল গায়েবের কারণে ডিলারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. শরীফ মোল্লা।
জানা গেছে, প্রতিবছরের মতো এ বছরও সরকার সারা দেশে ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিতরণ কার্যক্রম শুরু করেছে। এরই অংশ হিসেবে গত ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে ভৈরবের সাতটি ইউনিয়নে নির্ধারিত ডিলারের মাধ্যমে ১০ টাকা কেজি দরে প্রত্যেক পরিবারের মধ্যে মাসে ৩০ কেজি করে চাল বিতরণ শুরু করা হয়। বরাদ্দকৃত চাল উত্তোলন করে নিজ নিজ গোডাউনে রেখে ট্যাগ অফিসারের সামনে বিতরণ করার কথা ডিলারদের। সে অনুযায়ী, শ্রীনগর গ্রামের ডিলার হেলাল উদ্দিন হেলু তাঁর বরাদ্দকৃত ৩১৮ জন কার্ডধারীর জন্য ১৯০ বস্তা চাল ডিওর মাধ্যমে উত্তোলন করেন।
কিন্তু গত সোমবার সকালে গোডাউনে রাখা বরাদ্দকৃত চাল বিতরণের আগে দেখতে গেলে ২৪ বস্তা চাল কম পাওয়া যায়। পরে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. শরীফ মোল্লা, শ্রীনগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সার্জেন্ট (অব.) আবু তাহের ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আবুল বাশারসহ অনেকেই ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এ সময় গায়েব হওয়া ২৪ বস্তা চালের ব্যাপারে ডিলারকে প্রশ্ন করা হলে তাঁর কাছ থেকে কোনো জবাব পাওয়া যায়নি। এ সময় চাল বিতরণ কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এ ব্যাপারে ট্যাগ অফিসার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) উপ-সহকারী প্রকৌশলী খন্দকার শফিকুর রহমান বরাদ্দের ২৪ বস্তা চাল গায়েবের কথা স্বীকার করে বলেন, ‘চাল কম পাওয়ায় হতদরিদ্রদের মধ্যে বিতরণ বন্ধ রাখা হয়েছে। এ ছাড়া ডিলার হেলাল উদ্দিনকে গায়েব হওয়া চাল দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।’
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. শরীফ মোল্লা বলেন, ‘বরাদ্দকৃত ১৯০ বস্তা চাল উত্তোলন করেছেন ডিলার হেলাল উদ্দিন। তিনি আমাকে বার বার বলছিলেন, চাল বিতরণ করে দেওয়ার জন্য। বিষয়টি আমার কাছে সন্দেহজনক মনে হওয়ায় আমি এতে রাজি হইনি। পরে আমরা তাঁর গোডাউনে ১৯০ বস্তার মধ্যে ১৬৬ বস্তা চাল পাই।’ ওই ডিলারের বিরুদ্ধে এক থেকে দুদিনের মধ্যে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান শরীফ মোল্লা।
ভৈরব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুবনা ফারজানা জানান, বিষয়টি তিনি শুনেছেন। এ বিষয়ে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যেও বলেছেন বলে জানান।