টঙ্গীতে ‘ডিসকো বারে’ খদ্দের ও তরুণীসহ গ্রেপ্তার ২০
গাজীপুরের টঙ্গীতে এক ডিসকো বারে অভিযান চালিয়ে অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত অভিযোগে তরুণী ও খদ্দেরসহ ১৮ জনকে ও অপর এক অভিযানে মাদকসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার গভীর রাতে এ অভিযান চালানো হয়।
পুলিশ জানায়, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের টঙ্গী এলাকায় জাভান আবাসিক হোটেলে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে ‘ডিসকোবার’ পরিচালিত হয়ে আসছিল। হোটেলের ম্যানেজার রিয়াজ শাহেদ বাবু, নাচ-গান ব্যবস্থাপক জসিম উদ্দিন ও মুনসুর আহমেদের নেতৃত্বে এ ডিসকোবার পরিচালনা করছিলেন। ডিসকোবার’এ প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে সারা রাত অসামাজিক কার্যকলাপ, মাদকের রমরমা ব্যবসা ও উচ্চ শব্দে নাচ ও গান হত। এতে এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ উঠে। এলাকাবাসীর একাধিক অভিযোগের ভিত্তিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত আড়াইটার দিকে টঙ্গী পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন ও ইনস্পেক্টর (অপারেশন) বাবু সুব্রত কুমার পোদ্দারের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ওই ‘ডিসকোবার’এ অভিযান চালায়। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে অসামাজিক কার্যকলাপ করার অভিযোগে ১২ তরুণী ও যৌনকর্মী, ৬ খদ্দেরসহ মোট ১৮ জনকে আটক করা হয়। পুলিশ ওই ডিসকোবার থেকে ৩৩ বোতল বিদেশি মদ, ৬০ ক্যান বিয়ার ও নগদ একলাখ পাঁচ হাজার টাকা জব্দ করে। অভিযানকালে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালাতে গিয়ে ভবনের তিনতলা থেকে নিচে লাফ দেয় ডিসকোবারের হিসাবরক্ষক মাহাবুবুর রহমান (৪০)। এ সময় বিদ্যুতের তারের উপর পড়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে তাঁর শরীর ঝলসে যায়।
স্থানীয়রা গুরুতর অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাষ্টার জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে উন্নত চিকিসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এ ব্যাপারে হোটেল মালিক মো. বাদল শেখ জানান, ‘আমার হোটেলে বারের সরকারি অনুমোদন রয়েছে। তথাপি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হোটেলে অভিযান চালিয়ে মালামাল নিয়ে গেছে।’
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (গোয়েন্দা) মো. মনজুর রহমান জানান, বার কর্তৃপক্ষ অবৈধভাবে আবাসিক হোটেলে ডিসকোবার পরিচালনা করে আসছিল। সেখানে মাদক বিক্রি ও সেবনসহ অসামাজিক কার্যকলাপ চলত। বার কর্তৃপক্ষ লাইসেন্সসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আছে বলে দাবি করলেও অভিযানকালে তাঁরা কোনো বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি।
অপরদিকে একই রাত ১২টার দিকে টঙ্গীর দত্তপাড়া হাউজ বিল্ডিং এলাকার একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে ৯৬ ক্যান বিয়ার ও ১২ বোতল বিদেশি মদসহ মিলন (৪০) ও মহসিনকে (৩৫) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। উভয় ঘটনায় থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে।
টঙ্গী পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন বলেন, ‘গ্রেপ্তারদের শুক্রবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’