‘জি কে শামীম আওয়ামী লীগের কেউ না’
আওয়ামী লীগের কোনো কমিটিতে আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর কাছে আটক হওয়া জি কে শামীমের অস্তিত্ব নেই বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের উপ দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া।
আজ শুক্রবার অস্ত্র, মাদক, প্রায় ২০০ কোটি টাকার এফডিআর চেক ও নগদ কোটি টাকাসহ জি কে শামীমকে আটক করেছে র্যাব।
জি কে শামীম আওয়ামী লীগ নাকি যুবলীগ নেতা এমন বিভ্রান্তির প্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের উপদপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া এ কথা জানান।
ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, ‘আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংরক্ষিত তথ্য অনুযায়ী নারায়ণগঞ্জ জেলা বা মহানগর আওয়ামী লীগের তালিকায় জি কে শামীম নামের কোনো ব্যক্তির অস্তিত্ব নেই। নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির অনুমোদন হয় ২০১৭ সালের ১০ আগস্ট।’
ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া ওই কমিটির একটি অনুলিপি দেখিয়ে বলেন, ‘এখানে জি কে শামীম নামের কোনো ব্যক্তির নাম নেই। আওয়ামী লীগের সাথে তার কোনো ধরনের সংশ্লিষ্টতা নেই।’
একই দাবি করেন যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী। এ বিষয়ে যুবলীগ চেয়ারম্যান এনটিভি অনলাইন কে বলেন, ‘জি কে শামীম কোনো কালে, কোনো সময়ে, কোনো দিন যুবলীগের কেউ ছিল না। কে এই জি কে শামীম? যুবলীগের কোনো পদে সে আছে? আমি যুবলীগের চেয়ারম্যান আমি তো তাকে নেতা বানাইনি। যুবলীগের কমিটির কোথাও তো তার নাম নেই। তাহলে আপনি কোথায় পেলেন? কেন বলছেন শামীম যুবলীগের নেতা? আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, জি কে শামীম অথবা গোলাম কিবরিয়া শামীম নামে যুবলীগের কোনো নেতা নেই।’
বিপ্লব বড়ুয়া আরো বলেন, ‘আওয়ামী লীগের ২০১৮ সালে ঘোষিত নির্বাচনী ইশতেহারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সর্বপ্রকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছিলেন। দেশে দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতি চিরতরে বন্ধ করে শুদ্ধ রাজনীতির ধারাকে স্থায়ী করার জন্য প্রধানমন্ত্রী জনগণের অভিপ্রায়ে দুর্নীতির এবং দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতির বিরুদ্ধেও নির্মোহভাবে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।’
বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, 'আমি আমার দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের-এর নির্দেশনায় বিনীতভাবে বলতে চাই- দেশের সব চেয়ে পুরাতন ও ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক সংগঠন আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি নষ্ট হয় এমন কোনো তথ্য প্রকাশের পূর্বে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের কাছ থেকে তথ্যটি যাচাই করুন এবং বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করুন।’
ঢাকায় চাঁদাবাজি-অস্ত্রবাজি ও জুয়াবিরোধী অভিযানের মধ্যে শুক্রবার গুলশানের নিকেতনে জি কে শামীমের অফিসে যান র্যাব সদস্যরা। যুবলীগের নেতা পরিচয় দিয়ে ঠিকাদারি চালিয়ে আসা শামীমের বিরুদ্ধে টেন্ডারবাজি-চাঁদাবাজির অভিযোগ করেছেন র্যাব কর্মকর্তারা।
জি কে শামীম যুবলীগের সমবায় সম্পাদক বলে কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়। রাজধানীর সবুজবাগ, বাসাবো, মতিঝিলসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রভাবশালী ঠিকাদার হিসেবে পরিচিত জি কে শামীম।
যুবলীগে শামীমের কোনো পদ না থাকলেও তিনি নিজেকে সংগঠনের সমবায় বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে পরিচয় দিতেন বলে জানান যুবলীগের কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ইকবাল মাহমুদ বাবলু।
বিষয়টি নিয়ে যুবলীগ নেতাদের মধ্যে কয়েকবার আলোচনা হওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘জি কে শামীম এক সময় যুবদলের সহ-সম্পাদক ছিল। এখন সে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বলে শুনেছি।’
তবে নারায়ণঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাই এনটিভিকে বলেন, ‘জি কে শামীম নামে নারায়ণঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগে কোনো সহ-সভাপতি বা সদস্য নেই।’
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার দক্ষিণপাড়া গ্রামের মো. আফসার উদ্দিন মাস্টারের ছেলে শামীম থাকেন বনানীর ডিওএইচএসে। আর নিকেতনে ৫ নম্বর সড়কের ১৪৪ নম্বর ভবনটি তিনি তার জিকেবি অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেডের অফিস হিসেবে ব্যবহার করেন।