ডেঙ্গুতে তিন জেলায় তিনজনের মৃত্যু
ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ফরিদপুর, ময়মনসিংহ ও কুষ্টিয়ায় তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁরা হলেন শেফালী বেগম (৭০), ফাতেমা বেগম (৬৫) ও কলেজছাত্র তারেক হোসেন (২৫)।
ঢাকার বাইরে থেকে আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর :
সঞ্জিব দাস, ফরিদপুর : ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী শেফালী বেগমের (৭০) মৃত্যু হয়েছে গতকাল শুক্রবার। শেফালী বেগমের বাড়ি মাগুরায়।
হাসপাতালের পরিচালক ডা. কামদা প্রসাদ সাহা জানান, মাগুরা সদর হাসপাতাল থেকে রেফার হয়ে শুক্রবার দুপুরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় শেফালী বেগম ভর্তি হন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতেই তাঁর মৃত্যু হয়।
এদিকে, ফরিদপুর সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ফরিদপুরের বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে ২৩ জন। বর্তমানে জেলার হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নিচ্ছে ২১৫ জন। গত ২০ জুলাই থেকে এখন পর্যন্ত দুই হাজার ৬৩২ জন চিকিৎসা নিয়েছে। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে এক হাজার ৯৮৫ জন। ঢাকায় পাঠানো হয়েছে ৪২৩ জনকে। জেলার সরকারি হিসাবে এখন পর্যন্ত শিশুসহ নয়জনের ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে।
আইয়ুব আলী, ময়মনসিংহ : ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ফাতেমা বেগম (৬৫) নামের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার দুপুরে হাসপাতোলে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। তিনি জামালপুরের ইসলামপুরের বাসিন্দা ছিলেন।
হাসপাতালের সহকারী পরিচালক এ বি এম সামসুজ্জামান জানান, গত ১৯ সেপ্টেম্বর সকালে ফাতেমা (৬৫) অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস ও ডেঙ্গুজ্বর নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। ফাতেমা ছিলেন স্ট্রোকের রোগী। পরে গতকাল সকালে তাঁর অবস্থার অবনতি হলে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এখন পর্যন্ত এক হাজার ৪০২ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় একজন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। বর্তমানে রোগীর সংখ্যা ২৪।
সাবিনা ইয়াসমিন শ্যামলী, কুষ্টিয়া : কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার শ্যামনগর গ্রামে ডেঙ্গু আক্রান্ত কলেজছাত্র তারেক হোসেনের (২৫) মৃত্যু হয়েছে। আজ শনিবার দুপুর দেড়টার দিকে রাজশাহী মেডিকেলে নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়।
তারেক শ্যামনগর ঈদগাপাড়ার মহির উদ্দিনের ছেলে ও খলিশাকুণ্ডি ডিগ্রি কলেজের স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির ছাত্র।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার নুরুন নাহার বেগম জানান, আশঙ্কাজনক অবস্থায় আজ সকালে হাসপাতালে ভর্তি হন তারেক। দ্রুত চিকিৎসা দিয়ে তাঁকে রাজশাহী পাঠানো হয়। চিকিৎসা নিতে দেরি হওয়ায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, কয়েকদিন জ্বরে ভোগার পর গতকাল শুক্রবার প্রথমে তারেককে মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ডেঙ্গু ধরা পড়ায় আজ সকাল ১০টায় তাঁকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করলে অবস্থার অবনতি হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকরা দুপুর ১২টার দিকে তাঁকে রাজশাহী মেডিকেলে নিতে বলেন।
এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালসহ জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ২১ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছে। বর্তমান জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে ৭২ জন। এ পর্যন্ত জেলায় এক হাজার ১০২ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর আগে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দুই নারী ও এক শিশুর মৃত্যু হয়।