ফতুল্লার সরঞ্জামের সঙ্গে ঢাকায় বিস্ফোরিত বোমার মিল
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার ‘জঙ্গি আস্তানায়’ অভিযান চালিয়ে বিস্ফোরক ও বোমা তৈরির যেসব সরঞ্জাম পাওয়া গেছে তার সাথে সম্প্রতি ঢাকায় হওয়া বিস্ফোরণের আলামতের মিল রয়েছে। আজ সোমবার দুপুরে অভিযান শেষে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম।
কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের সদস্যরা আজ ভোরে ফতুল্লার তক্কার মাঠ এলাকায় জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে বাংলাদেশ ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) জয়নাল আবেদিনের বাড়ি ঘেরাও এবং পরে অভিযান চালিয়ে তিনজনকে আটক করেন।
তারা হলেন- জয়নাল আবেদিনের ছেলে ঢাকার আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকানিক্যাল এবং প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষক ফরিদ উদ্দিন রুমি (২৭) ও খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষক জামালউদ্দিন রফিক (২৫) এবং রুমির স্ত্রী অগ্রণী ব্যাংকের কর্মী জান্নাতুল ফুয়ারা অনু (২০)।
রুমি ও রফিক নব্য জেএমবির সদস্য দাবি করে মনিরুল ইসলাম বলেন, ঢাকায় বড় বড় হামলার সঙ্গে রুমির যোগসূত্র রয়েছে। অভিযানে বিপুল বিস্ফোরক সরঞ্জামের আলামত পাওয়া গেছে।
কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, এর আগে ঢাকায় পাঁচবার হামলা ও হামলার পরিকল্পনায় ব্যবহার হওয়া বিস্ফোরকের সঙ্গে এখান থেকে উদ্ধার হওয়া বিস্ফোরক ও আলামতের মিল রয়েছে। পুলিশের ওপর হামলার পরিকল্পনার প্রস্তুতি হিসেবে এখানে বিস্ফোরক ও সুইসাইডাল ভেস্ট তৈরি করা হচ্ছিল। পুলিশ বাহিনীকে দুর্বল ও আতঙ্কগ্রস্ত করাই ছিল তাদের মূল লক্ষ্য।
গতকাল রোববার রাতে মিজান নামের একজনকে ঢাকা থেকে আটক করার পর তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে নারায়ণগঞ্জের এই অভিযান শুরু করা হয়। মিজানের দেওয়া তথ্যানুযায়ী ভোররাতে ফতুল্লার তক্কার মাঠের এলাকার একটি ভবন থেকে আরো দুজনকে আটক করা হয়। পরে আটককৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া বিস্ফোরকের সন্ধানে একই এলাকার আরেকটি টিনশেড বাড়ি ঘেরাও করেন কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের সদস্যরা। সকাল ১০টায় বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট ওই বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বোমা তৈরির সরঞ্জামসহ সুইসাইডাল ভেস্ট জব্দ করে। এ সময় বেশ কয়েকটি বোমা নিষ্ক্রিয় করে বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট।
নারায়ণগঞ্জে জঙ্গিদের নেটওয়ার্ক আছে কি না, এই ব্যাপারে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের উদ্দেশে মনিরুল ইসলাম বলেন, ঢাকার কাছে হওয়ায় এবং স্বল্প আয়ের জনবহুল মানুষের মাঝে লুকিয়ে সহজে কার্যক্রম পরিচালনা করতে এ সব জায়গায় জঙ্গিরা আস্তানা তৈরি করে। এদের ব্যাপারে এখনো পুরোপুরি জানা যায়নি। তবে এদের গ্রেপ্তারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে।