বর্তমানে শিক্ষিত লোকেরাই বেশি অপরাধ করছে : আইনমন্ত্রী
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেছেন, ‘বর্তমানে শিক্ষিত লোকেরাই বেশি অপরাধ করছে। দেশে এমন কোনো অপরাধ নেই যা শিক্ষিত লোকেরা করছে না। এটি আমাদের ভাবিয়ে তুলছে।’
আজ শনিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণিতে অধ্যয়নরত দুই হাজারের বেশি শিক্ষার্থীকে ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড ওই বৃত্তি প্রদান করে।
আইনমন্ত্রী আরো বলেন, ‘শিক্ষার সকল সূচকে বাংলাদেশ এগিয়ে গেলেও একটি বিষয় আমাদের ভাবিয়ে তুলেছে। তা হলো সারা বিশ্বে এই তত্ত্ব প্রতিষ্ঠিত, যে জাতি যত উন্নত ও শিক্ষিত সে জাতির মধ্যে অপরাধ প্রবণতা তত কম। কিন্তু বাংলাদেশে উন্নয়নের গতি ও শিক্ষার হার বাড়লেও সামাজিক অপরাধ কমছে না। সবচেয়ে বেশি উদ্বেগের বিষয় হলো শিক্ষিত লোকের মাধ্যমেই অপরাধগুলো বেশি ঘটছে এবং এমন কোনো অপরাধ নেই যেটা শিক্ষিত লোকের মাধ্যমে ঘটছে না।’
ডাচ বাংলা ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান সায়েম আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির ও ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কাশেম মো. শিরিন বক্তৃতা করেন।
আনিসুল হক বলেছেন, ‘বর্তমানে আমাদের সমাজের একটি বড় সমস্যা হলো দুর্নীতি। যা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ এবং আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক নীতি। যা সমাজের বিরাট অংশকে শোষিত ও বঞ্চিত করছে। সমাজে ব্যাপক বৈষম্য তৈরি করছে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে বাধাগ্রস্থ করছে। সে কারণেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছে। এই নীতি বাস্তবায়নের জন্য দুর্নীতি বিরোধী অভিযান চালানো হচ্ছে।’
শিক্ষার আসল মর্মার্থ আত্মস্থ করে শিক্ষার্থীদের মাদক ও অনৈতিক কাজের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহবান জানিয়ে আইনমন্ত্রী আরো বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার এ ব্যাপারে সব ধরনের সহযোগিতা করবে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।’তিনি বলেন, ‘যুগোপযোগী ও মানসম্পন্ন শিক্ষা ব্যবস্থা ছাড়া সুশিক্ষিত ও দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলা সম্ভব নয়। তাই সবার জন্য মানসম্পন্ন শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করা আমাদের জাতীয় কর্তব্য। সরকারের একার পক্ষে এই বিশাল দায়িত্ব পালন করা দুরূহ ব্যাপার। সরকারের পাশাপাশি সব বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এমনকি ব্যক্তি বিশেষ এগিয়ে এলে সরকার নতুনভাবে উজ্জীবিত হবে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘অতীতে আমাদের মানসম্পন্ন শিক্ষা প্রদানের ক্ষেত্রে ছিল চরম বৈষম্য। এই বৈষম্য ছিল শহর ও গ্রামীণ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে, ধনী ও দরিদ্রের মধ্যে, শিক্ষিত ও অশিক্ষিত পরিবারের মধ্যে এমনকি একই শহরের ভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে।’