লোকমান রিমান্ডে অনেক চতুরতা দেখিয়েছেন
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালক ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের ডিরেক্টর ইনচার্জ লোকমান হোসেনকে ফের দুই দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আশেক ইমাম এ আদেশ দেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আজাদ রহমান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তেজগাঁও থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মুহাম্মদ কামরুল ইসলাম আজ আসামি লোকমানকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্টেট আদালতে হাজির করে ফের পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। সে আবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, আসামি লোকমানকে দুদিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, আসামির নিয়ন্ত্রণাধীন মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের ক্যাসিনোতে অবৈধভাবে বিদেশি মদ, হুইস্কি আসামির নির্দেশমতে বিভিন্নভাবে সরবরাহ করে বিক্রি করা হতো। তাঁকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে আসামি মামলার ঘটনার বিষয়টি চতুরতার সঙ্গে এড়িয়ে যান। একপর্যায়ে আসামি তাঁর নিয়ন্ত্রণাধীন মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবে যেসব উৎস থেকে তিনি অবৈধভাবে বিদেশি মদ ও হুইস্কি সরবরাহ করতেন সে বিষয়ে আংশিক তথ্য প্রদান করেন।
আবেদনে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, আসামিকে আবার রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তাঁর পরিচালিত ক্লাবে ক্যাসিনোতে অবৈধভাবে মদ-হুইস্কি প্রাপ্তির উৎস, অপরাধের সঙ্গে জড়িত অন্যান্য প্রকৃত অপরাধীর নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করা যাবে। গ্রেপ্তারসহ মদ-হুইস্কি উদ্ধারের লক্ষ্যে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আসামিকে রিমান্ডে নেওয়া একান্ত প্রয়োজন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আজাদ রহমান শুনানিতে বলেন, আসামি রিমান্ডে গিয়ে অনেক চতুরতা দেখিয়েছেন। তাঁকে পুনরায় রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী মকবুল হোসেন ফকির বলেন, ‘মাননীয় আদালত আমার (আসামি লোকমান) বিরুদ্ধে অভিযোগ পুলিশ চার বোতল মদ পেয়েছে। আমার নলেজ, কন্ট্রোল ও পজিশনে এগুলো পাওয়া যায়নি। এমনকি আমার (লোকমান) দেখানো মতেও এগুলোও উদ্ধার করা হয়নি। বিজ্ঞ আদালত, তদন্ত কর্মকর্তা বলেছেন, আমি নাকি রিমান্ডে চতুরতার সঙ্গে এড়িয়ে যাচ্ছি, করেছি। আমাকে পাঁচ দিন ও পাঁচ রাত রিমান্ডে রাখা রয়েছে। সে শুধু মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের ডাইরেক্টর। আমার মালিক আছে, বস আছে, আরো অনেকে আছে। আমাদের নিবেদন থাকবে বিজ্ঞ আদালত চাইলে জেল-গেটে জিজ্ঞাসাবাদ দিতে পারেন।’
আসামিপক্ষের আইনজীবী শুননিতে বলেন, মামলায় বলা আছে, চার বোতল মদ তাঁর বাসা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। কিন্তু তিনি এ সম্পর্কে কিছু জানেন না। কারণ তিনি মদ রাখেননি। তাঁকে পাঁচ দিন পাঁচ রাত জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তারপরও রিমান্ড। যত ইচ্ছে রিমান্ড চাইতে পারেন। কিন্তু তাতে মামলার কোনো ডেভেলপ হবে না। কারণ এ ধরনের কাজে তিনি জড়িত ছিলেন না। আমরা তাঁর রিমান্ড বাতিল পূর্বক জামিনের প্রার্থনা করছি। শুনানি শেষে বিচারক দুদিনের রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দেন।
এর আগে গত শুক্রবার লোকমান হোসেন ভূঁইয়াকে আদালতে হাজির করে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছিলেন তদন্ত কর্মকর্তা। সেদিন শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সরাফুজ্জামান আনছারী দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
লোকমান হোসেন ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়।
গত বুধবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের মণিপুরীপাড়ার নিজ বাসা থেকে লোকমান হোসেন ভূঁইয়াকে আটক করা হয় বলে এনটিভি অনলাইনকে জানান র্যাব ২-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ। তাঁর বাসায় অভিযান চালিয়ে একাধিক বোতল মদ পাওয়া যায় বলে র্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়।