চট্টগ্রামে ডেঙ্গুতে বোনের মৃত্যু, ভাই হাসপাতালে
চট্টগ্রামে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সুমি বৈদ্য (১৯) নামের এক তরুণীর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শনিবার রাতে নগরীর বেসরকারি ন্যাশনাল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তাঁর। এ ছাড়া ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সুমির ছোট ভাই অরূপ বৈদ্যও (১৬) হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।
সুমি বৈদ্য খুলশী এলাকার সুনীল বৈদ্যর মেয়ে।
স্বজনরা জানিয়েছেন, সুমির ছোট ভাই অরূপের ডেঙ্গু ধরা পড়লে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সুমিও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে গত শুক্রবার তাঁকে বেসরকারি ন্যাশনাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
বার্তা সংস্থা ইউএনবি জানিয়েছে, গতকাল সন্ধ্যায় সুমি ও অরূপের ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়ার পর ন্যাশনাল হাসপাতাল ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে গিয়ে তাদের খোঁজখবর নেন স্বাস্থ্য দপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর ও জেলা সিভিল সার্জন ডা. আজিজুর রহমান সিদ্দিকী।
আজিজুর রহমান সিদ্দিকী বলেন, ‘সুমি ডেঙ্গু শক সিনড্রোমে আক্রান্ত ছিলেন। তাদের দুজনের খবর শুনে আমরা দেখে এসেছি। এর কিছুক্ষণ পরেই সুমির মৃত্যু হয়। যতটুকু শুনেছি, সুমির ডেঙ্গু ধরা পড়ার পর তাঁর বাবার ফার্মেসির দোকান থাকায় নিজে নিজেই চিকিৎসা করেছিলেন। এ বিষয়ে অবহেলা না করে যদি প্রথমেই চিকিৎসা করানো হতো, তাহলে হয়তো সুমি বেঁচে যেতেন। তবে চমেক হাসপাতালে গিয়ে সুমির ছোট ভাই অরূপকে দেখে এসেছি। সে বর্তমানে কিছুটা ভালো আছে। আশা করছি, দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে।’
অক্টোবরের শুরুতে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া নতুন ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা তিনশর নিচে নেমে এসেছে। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৬৯ নতুন রোগী।
এর মধ্যে ঢাকায় ৬০ জন ও বাকি ২০৯ জন দেশের অন্যান্য এলাকায় ভর্তি হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম।
সরকারি তথ্যমতে, গত জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত সারা দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৮৯ হাজার ৬১৬ জন। চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে ফিরে গেছেন ৮৭ হাজার ৯০৩ জন। অর্থাৎ সারা দেশে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পাওয়া রোগীর সংখ্যা ৯৮ শতাংশ।
ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব এ বছর এশিয়ার অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছিল। তবে গত সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে পরিস্থিতির উন্নতি হওয়া শুরু হয় এবং বর্তমানে কমে আসছে নতুন ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা।
বর্তমানে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে দেশের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি আছেন এক হাজার ৪৭৭ রোগী। তাঁদের মধ্যে ঢাকায় চিকিৎসা নিচ্ছেন ৪৯৫ জন।
রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) এ বছর ডেঙ্গু সন্দেহে ২৩৬টি মৃত্যুর তথ্য পেয়েছে। এর মধ্যে সংস্থাটি এ পর্যন্ত ১৩৬টি ঘটনার পর্যালোচনা সমাপ্ত করে ৮১টি মৃত্যু ডেঙ্গুজনিত বলে নিশ্চিত করেছে।