রায় শুনে কাঁদলেন রিশার মা, উল্লাস সহপাঠীদের
রাজধানীর উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের ছাত্রী সুরাইয়া আক্তার রিশা হত্যা মামলার আসামি ওবায়দুলের মৃত্যুদণ্ডের রায় শোনার পর আদালত চত্বরে কান্নায় ভেঙে পড়েন রিশার মা তানিয়া হোসেন।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের ছাত্রী সুরাইয়া আক্তার রিশা হত্যা মামলায় ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েস একমাত্র আসামি ওবায়দুলের মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করেন।
রায়ের পর কান্নাজড়িত কণ্ঠে রিশার মা তানিয়া বলেন, ‘রায়ে আমি খুশি। ফাঁসির রায় যেন দ্রুত কার্যকর করা হয়। আমার মতো যেন আর কোনো মায়ের কোল খালি না হয়।’ এর আগে সকালে আদালতে রায়ের অপেক্ষায় হাজির হন রিশার মা তানিয়া। এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আবুল হোসেন ও গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান আরেফুর রহমান টিটু। তারাও রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে তা দ্রুত কার্যকরের দাবি জানান।
রায়ে উল্লাস সহপাঠীদের
রিশা হত্যার রায়ের পরে আদালতে উল্লাস করেছে তার সহপাঠিরা। তারা দ্রুত এ রায় কার্যকর করার দাবি জানায়। এর আগে সকাল থেকে আদালত চত্বরে রিশার সহপাঠীরা আদালতে রিশা হত্যা মামলায় আসামি ওবায়দুলের মৃত্যুদণ্ড চেয়ে মানববন্ধন করে।
২০১৬ সালের ২৫ অক্টোবর কাকরাইলে নিজ স্কুলের সামনে খুন হয় রিশা। ও তখন অষ্টম শ্রেণিতে পড়ত।
২০১৬ সালের ১৪ নভেম্বর ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে রমনা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আলী হোসেন রিশা হত্যা মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
অভিযোগপত্রে ২৬ জনকে সাক্ষী হিসেবে রাখা হয়। নথি থেকে জানা যায়, ২০১৬ সালের ৫ সেপ্টেম্বর ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আহসান হাবীবের আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারা অনুযায়ী স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন ওবায়দুল।
জবানবন্দিতে ওবায়দুল বলেন, ‘আমি রিশাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিন্তু সে আমার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। তাই আমি তাকে ছুরিকাঘাত করি।’ এর আগে ওই বছরের ৩১ অক্টোবর ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) এইচ এম আজিমুল হকের নেতৃত্বে ওবায়দুলকে নীলফামারী থেকে গ্রেপ্তার করে ঢাকায় আনা হয়।
২০১৬ সালের ২৫ অক্টোবর দুপুরে ঢাকার কাকরাইলে স্কুলের সামনে ফুটওভার ব্রিজের ওপর রিশার পেট ও হাতে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান টেইলার্স কর্মচারী ওবায়দুল। রিশাকে হাসপাতালে নেওয়ার পর তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় রিশার মা রমনা থানায় দণ্ডবিধির ৩০৭ (হত্যার উদ্দেশ্যে আঘাত) ধারায় মামলা করেন। পরে রিশার মৃত্যু ঘটলে তা সরাসরি দণ্ডবিধির ৩০২ (হত্যা) ধারায় মামলায় রূপান্তরিত হয়।