একদিনেই ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ছয়জন নিহত
খুলনার কয়রা উপজেলার সুন্দরবন, লক্ষ্মীপুর সদর ও হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলায় কথিত বন্দুকযুদ্ধে একদিনেই ছয় জন নিহত হয়েছেন বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার সকালে খুলনার কয়রা উপজেলার সুন্দরবনে কথিত বন্দুকযুদ্ধে চার ব্যক্তি নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। পুলিশের এই এলিট ফোর্সের দাবি, নিহতরা বনের সংগঠিত দস্যুদলের সদস্য।
অন্যদিকে আজ ভোররাতে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলায় দুই সন্ত্রাসী বাহিনীর মধ্যে কথিত বন্দুকযুদ্ধে ইলিয়াস (৩৫) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন বলে দাবি করছে পুলিশ।
এ ছাড়া হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলায় কথিত বন্দুকযুদ্ধে কুদরত আলী নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। পুলিশের দাবি, নিহত কুদরত ডাকাত সর্দার ছিলেন।
খুলনা থেকে প্রতিনিধি মুহাম্মদ আবু তৈয়ব জানান, আজ মঙ্গলবার সকালে র্যাব-৬ এর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, সুন্দরবনে সংগঠিত বনদস্যুদের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত চার জনের মধ্যে রয়েছেন বনদস্যু দলের প্রধান আমিনুর রহমান ও তাঁর সেকেন্ড ইন কমান্ড রফিক।
এ ছাড়া নিহত অপর দুই ‘দস্যুর’ নাম-পরিচয় জানাতে পারেনি র্যাব। এ সময় র্যাবের দুই সদস্য আহত হয়েছেন বলেও দাবি করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ জব্দ করা হয়েছে বলেও জানায় র্যাব।
লক্ষ্মীপুর থেকে প্রতিনিধি আবুল কালাম আজাদ জানিয়েছেন, সদর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের বকুলতলা এলাকায় কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত ব্যক্তির নাম ইলিয়াস। তিনি উপজেলার উত্তর জয়পুর ইউনিয়নের উত্তর মাগুরা গ্রামের নুরুল আমিনের ছেলে।
পুলিশের দাবি, আজ ভোররাতে দত্তপাড়া ইউনিয়নের বকুলতলা এলাকায় গুলির আওয়াজ শুনে টহল পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। এ সময় ইলিয়াস নামের ওই যুবককে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। ঘটনাস্থল থেকে একটি বন্দুক, দুটি গুলি, পাঁচটি গুলির খোসা ও দেশি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। পরে ওই যুবককে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদের ভাষ্যমতে, দুই সন্ত্রাসী বাহিনীর মধ্যে বন্দুকযুদ্ধে ওই যুবক গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। নিহতের বুকে গুলির চিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
হবিগঞ্জ থেকে প্রতিনিধি হারুনুর রশিদ চৌধুরী জানিয়েছেন, শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার সুরাবই গ্রামের ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় নিহত ব্যক্তির নাম কুদরত। তিনি উপজেলার দড়িয়াপুর গ্রামের বাসিন্দা। পুলিশ বলছে, কুদরত আলীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১৩টি ডাকাতির মামলা রয়েছে।
হবিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রবিউল ইসলামের ভাষ্যমতে, সুরাবই গ্রামের একটি বাঁশবাগানে একদল দুর্বৃত্ত ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছিল। খবর পেয়ে তাঁর নেতৃত্বে শায়েস্তাগঞ্জ থানা ও ডিবি পুলিশ দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।
‘এ সময় ডাকাতরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকে। পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি ছুড়লে ডাকাতরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। পরে সেখান থেকে একজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাঁকে সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে স্থানীয়রা নিহত ব্যক্তিকে কুদরত আলী বলে শনাক্ত করেন।’
রবিউল ইসলাম আরো দাবি করেন, এ ঘটনায় ছয় পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তাঁদের সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি দেশি পাইপগান, ছয়টি গুলি, দুটি রামদা, রডসহ ডাকাতির কাজে ব্যবহারের সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।