কিশোরগঞ্জে বিচারকের অপসারণ দাবিতে আইনজীবীদের কর্মবিরতি
কিশোরগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ২-এর বিচারক মো. সোলায়মানের অপসারণসহ বিভাগীয় শাস্তির দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছেন আইজীবীরা। পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে আদালতের আইজীবীরা যেকোনো কার্যক্রমে অংশ নেওয়া থেকে বিরত রয়েছেন।
গতকাল ওই আদালতের এজলাসে সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মীর মো. ইকবাল হোসেন বিপ্লব পেশকারের কাছ থেকে একটি মামলার নথি দেখাকে কেন্দ্র করে বিচারক মো. সোলায়মান ক্ষুব্ধ হন। এরপর ওই আইনজীবীকে হাতকড়া পরিয়ে আসামির কাঠগড়ায় উঠানোর নির্দেশ দেন। এ ঘটনায় উপস্থিত আইনজীবীরা প্রতিবাদী ও বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন। খবর পেয়ে অন্য আদালত থেকেও আইনজীবীরা এসে উক্ত বিচারকের অপসারণ চেয়ে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন।
পরে জেলা আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মিয়া মো. ফেরদৌসের সভাপতিত্বে তাৎক্ষণিক জরুরি সভা করেন। সেখানে ওই বিচারকের বিরুদ্ধে অসদাচরণ, ক্ষমতার অপব্যবহার ও মানহানিসহ বিভিন্ন অভিযোগের কথা বলা হয়। তাঁকে অবিলম্বে অপসারণ ও বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়।
আজ সব আদালতে কর্ম বিরতি, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ অনির্দিষ্টকালের জন্য বর্জন এবং ওই বিচারকের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
গতকাল বিকেলে ওই বিচারকের বিরুদ্ধে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১ নম্বর আদালতে মীর মো. ইকবাল হোসেন বিপ্লব বাদী হয়ে মামলা করেন। তবে উক্ত আদালতের বিচারক মো. রফিকুল বারী মামলার ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোনো আদেশ দেননি।
জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মিয়া মো. ফেরদৌস জানান, একজন সিনিয়র আইনজীবীর নথি দেখাকে কেন্দ্র করে উক্ত বিচারক অসদাচরণ ও অশ্রাব্য বাক্য প্রয়োগ করেন। তাঁকে হাতকড়া পরিয়ে আসামির কাঠগড়ায় উঠানোর মাধ্যমে অবিচারকসুলভ আচরণ করেছেন। এটা কোনোমতেই আইনানুগ নয়। তিনি নিজেই আদালত অবমাননা করেছেন। বিষয়টি মহামান্য রাষ্ট্রপতি, আইন মন্ত্রণালয় ও হাইকোর্টকে জানিয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানানো হলে আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব গোলাম সারোয়ার দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।’
দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রোববার থেকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ আদালত বর্জন অব্যাহত থাকবে বলে জানান সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মিয়া মো. ফেরদৌস।