কাউন্সিলর রাজীব দুই মামলায় ১৪ দিনের রিমান্ডে
রাজধানীর ভাটারা থানায় দায়ের করা অস্ত্র ও মাদক আইনের মামলায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজীবের সাত দিন করে মোট ১৪ দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত।
গতকাল রোববার মধ্যরাতে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জেসমিন আরা যুবলীগের সাবেক এই নেতার রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হেমায়েত উদ্দিন খান (হিরণ) সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গতকাল রাত ১১টায় ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আসামি রাজীবকে হাজির করে অস্ত্র আইন ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় ১০ দিন করে ২০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তারা।
আবেদনের পর রাত ১১টা ১২ মিনিটে আসামিকে আদালতে তোলা হয়। এরপর রাত ১১টা ৫০ মিনিটে রিমান্ডের বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। রাজীবের পক্ষে তাঁর আইনজীবী মো. মেজবাহ উদ্দিন রিমান্ড বাতিল করে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক ১৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গত শনিবার রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি বাড়ি থেকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রাজীবকে গ্রেপ্তার করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। সেখান থেকে আগ্নেয়াস্ত্র, মদ ও নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়। পরে তাঁর বিরুদ্ধে ভাটারা থানায় অস্ত্র ও মাদক আইনে দুটি মামলা করে র্যাব-১। গতকাল রাতেই র্যাব আসামি রাজীবকে ভাটারা থানায় হস্তান্তর করে।
এদিকে র্যাব আরো জানায়, বসুন্ধরা এলাকা থেকে রাজীবকে গ্রেপ্তারের পর নিয়ে যাওয়া হয় তাঁর মোহাম্মদপুরের বাসায়। সেখানে প্রায় দুই ঘণ্টা পুরো বাসায় চলে র্যাবের তল্লাশি। বাসায় ব্যাপক তল্লাশির পর কাউন্সিলর রাজীবকে নিয়ে যাওয়া হয় বাসার অদূরেই তাঁর কার্যালয়ে।
সেখানে ঘণ্টাব্যাপী অভিযান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন অভিযানে থাকা র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম। তিনি বলেন, ‘তাঁর বাড়িতে ও অফিসে কোনো কিছুই আমরা পাইনি। আমরা যা বুঝতে পেরেছি, বাড়িতে তাঁর আর্থিক লেনদেনের যে ডকুমেন্টগুলো ছিল, চেকবই থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিষয়, এগুলো এরই মধ্যে তিনি সরিয়ে ফেলেছেন। এবং তাঁরই এক স্টাফের আত্মীয়ের বাড়ি থেকে চেকবইগুলোর কিছু নিয়ে আসা হয়েছে। সেখানে আমরা দেখেছি, ব্র্যাক ব্যাংক অ্যাকাউন্টে তিনি পাঁচ কোটি টাকা জমা দিয়েছেন।’
সারোয়ার আলম আরো বলেন, ‘তিনি আসলে কাউন্সিলর হওয়ার পরপরই ২০১৬ সালে তিনটি কোম্পানি খুলেছেন—সিলিকন, এক্কা ও নাইমা এন্টারপ্রাইজ। এই তিন প্রতিষ্ঠানের নামে আসলে তিনি জমি দখল করেছেন। এ অপরাধগুলো করতে গিয়ে তিনি যে লোকদের ব্যবহার করেছেন, আত্মীয় এবং অনাত্মীয়, প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
এদিকে ক্যাসিনোর সঙ্গে রাজীবের কোনো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি বলেও সাংবাদিকদের জানিয়েছে র্যাব।
এর আগে পাশের ৩২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান মিজানকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর বাসা থেকেও বিপুল টাকা ও অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।