মানিকগঞ্জ শ্রমিক লীগের কমিটি বাতিলের দাবিতে আদালতে আশ্রয়
মানিকগঞ্জ জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি বাবুল সরকার ও সাধারণ সম্পাদক কাজী মতিউর রহমানকে শ্রমিক লীগের কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন মানিকগঞ্জ সিনিয়র সহকারী জজ (ভারপ্রাপ্ত) মো. খুরশীদ আলম। সেই সঙ্গে গত ১৫ অক্টোবর শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি কর্তৃক অনুমোদিত জেলা কমিটি কেন অবৈধ হবে না, তা নোটিশ পাওয়ার সাত দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর জন্য কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শুকুর মাহামুদ, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, জেলা কমিটির সভাপতি বাবুল সরকার ও সাধারণ সম্পাদক কাজী মতিউর রহমানকে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আজ বুধবার জেলা শ্রমিক লীগের আগের অনুমোদিত কমিটির সভাপতি মো. আবদুল জলিল ও সাধারণ সম্পাদক হানিফ আলী বাদী হয়ে আদালতে অবৈধ কমিটি বাতিলের দাবিতে মামলা করেন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ৭ অক্টোবর কেন্দ্রীয় কমিটি মো. আবদুল জলিলকে সভাপতি ও মো. হানিফ আলীকে সাধারণ সম্পাদক করে ৭১ সদস্যবিশিষ্ট মানিকগঞ্জ জেলা শ্রমিক লীগের কমিটির অনুমোদন দেয়। জাতীয় শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম স্বাক্ষর করে ওই কমিটি অনুমোদন করেন।
এরপর, ১৫ অক্টোবর বাবুল সরকারকে সভাপতি ও কাজী মতিউর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক করে জাতীয় শ্রমিক লীগ মানিকগঞ্জ জেলা শাখার ৭১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় কমিটি।
২০ অক্টোবর কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শুক্কুর মাহামুদ জাতীয় সংসদের ন্যাম ভবনে মানিকগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য এ এম নাঈমুর রহমান দুর্জয়ের বাসায় গিয়ে বাবুল সরকারের হাতে ওই অনুমোদনের কপি তুলে দেন। এ সময় সংসদ সদস্য এ এম নাঈমুর রহমান দুর্জয়, মানিকগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম, বাবুল সরকার ও কাজী মতিউর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
৭ অক্টোবর ঘোষিত জেলা শ্রমিক লীগের কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. হানিফ আলী বলেন, ২০১৮ সালের ৮ অক্টোবর বাবুল সরকারকে সভাপতি ও তাঁকে সাধারণ সম্পাদক করে কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. সিরাজুল ইসলাম মানিকগঞ্জ জেলা শ্রমিক লীগের কমিটি অনুমোদন দেন। কিন্তু দীর্ঘ ২২ মাস অনুপস্থিত থাকা এবং চাঁদাবাজির অভিযোগে কেন্দ্রীয় কমিটির সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে জেলা কমিটির সভায় ৭১ সদস্যের মধ্যে ৫৫ জনের উপস্থিতির স্বাক্ষরে জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি বাবুল সরকারকে বহিষ্কার করা হয়। ৭ অক্টোবর আবদুল জলিলকে সভাপতি করে কমিটি পুনর্গঠন করা হয়। সেই কমিটি কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক অনুমোদন দেন। কিন্তু সাত দিনের মাথায় বাবুল সরকারকে সভাপতি করে আরেকটি কমিটির অনুমোদন দিয়ে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দলীয় কর্মকাণ্ড।
৭ অক্টোবর ঘোষিত জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি আবদুল জলিল বলেন, পরিবহন সেক্টরে চাঁদাবাজির কারণে বাবুল সরকার বিতর্কিত একজন ব্যক্তি। জেলা শ্রমিক লীগের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে চাঁদাবাজ বাবুল সরকারকে জেলা শ্রমিকলীগের সভাপতির পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। একজন বহিষ্কৃতকে কীভাবে জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি বানানো হলো, তা বোধগম্য নয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শুদ্ধি অভিযান চলার পরও শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি শুকুর মাহামুদ অর্থের বিনিময়ে বৈধভাবে একটি কমিটি থাকার পরও সাত দিনের মাথায় আরেকটি কমিটি অনুমোদন দিয়েছেন। বাধ্য হয়ে অবৈধ কমিটি বাতিলের দাবিতে আদালতের আশ্রয় নিয়েছি।
জেলা শ্রমিক লীগের অপর কমিটির সভাপতি বাবুল সরকার জানান, আদালতের নির্দেশ মোতাবেক যথা সময়ে জবাব দেওয়া হবে।