ঘটনাস্থলের ছবি নিয়ে গেল এফবিআই
লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকা পরিদর্শন করে ছবি তুলে নিয়ে গেছেন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইর চার সদস্য। এ ছাড়া তাঁরা বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও এর আশপাশের এলাকা ঘুরে দেখে ছবি তোলেন।
আজ শুক্রবার দুপুর দেড়টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত ঘটনাস্থলে অবস্থান করেন এফবিআই সদস্যরা। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার কৃষ্ণপদ রায়সহ গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) সদস্যরা। গত বুধবার এফবিআই দলটি তদন্ত করতে ঢাকায় আসে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনের ব্যাপারে কৃষ্ণপদ রায় সাংবাদিকদের বলেন, এফবিআইর সদস্যরা গতকাল বৃহস্পতিবার গোয়েন্দা (ডিবি) কার্যালয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে এফবিআই বাংলাদেশের কাছ থেকে কী ধরনের সহযোগিতা পাবে, এফবিআইর কাছ থেকে বাংলাদেশ কী ধরনের সাহায্য নেবে, বিশেষ করে প্রযুক্তিগত সুবিধা নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
কৃষ্ণপদ রায় আরো বলেন, ‘আজ মূলত তাঁরা মামলাবিষয়ক আনুষঙ্গিক তথ্য সংগ্রহ করেছেন। মামলার রহস্য উদঘাটনে এফবিআইর কাছ থেকে আমরা টেকনিক্যাল সহযোগিতা পাচ্ছি। আশা করছি, পরে পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে কাজ করব।’
এফবিআই স্বাধীনভাবে কাজ করছে কি না—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে কৃষ্ণপদ রায় বলেন, এফবিআই সহযোগিতা করার জন্য এসেছে, তারা সহযোগিতাই করছে।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে একুশে বইমেলা থেকে ফেরার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক লেখক অভিজিৎ রায় এবং তাঁর স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যাকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে জখম করে একদল দুর্বৃত্ত। মাত্রাতিরিক্ত রক্তক্ষরণে হাসপাতালে নেওয়ার পথেই মারা যান অভিজিৎ।
পরদিন ২৭ ফেব্রুয়ারি এই হত্যার তদন্তে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতা করতে আগ্রহ প্রকাশ করে এফবিআই। এ জন্য গোয়েন্দা সংস্থাটির পক্ষ থেকে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও অভিজিতের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।
আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের তিন দিন পর ১ মার্চ পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী সরকারের পক্ষ থেকে অভিজিৎ রায় হত্যাকাণ্ডের তদন্তে এফবিআইর আগ্রহকে স্বাগত জানান।
হত্যাকাণ্ডের এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও অভিজিৎ হত্যা মামলার প্রধান সন্দেহভাজন আসামি শফিউর রহমান ফারাবীকে গ্রেপ্তার ছাড়া তদন্তে আর কোনো অগ্রগতি দেখাতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গত সোমবার ভোরে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। মঙ্গলবার থেকে পুলিশের কাছে ১০ দিনের রিমান্ডে আছেন ফারাবী। তবে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদে কোনো তথ্য বেরিয়ে এসেছে কি না, সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।
এ ছাড়া একই ঘটনায় গুরুতর আহত অভিজিতের স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাঁর চিকিৎসার সব দায়িত্ব নিয়েছে দেশটির সরকার। এর আগে বাংলাদেশেও বন্যার চিকিৎসার তদারকি করে মার্কিন দূতাবাস।