অনশন করে দোকান ফেরত পেলেন হতদরিদ্র অমল
দোকান ফেরত পেতে বহুজনের কাছে ধরনা দিয়েছেন। তাতে কাজ হয়নি। অবশেষে অনশন করে জীবিকার একমাত্র সম্বলটি পেলেন বরগুনার আমতলীর বাসিন্দা হতদরিদ্র অমল চন্দ্র শীল।
আজ মঙ্গলবার বরগুনার আমতলী পৌর শহরের সদর রোডে কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে ছোট্ট দোকানঘরটি ফেরত পান অমল।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০০০ সালে কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে ছোট্ট একটি দোকানঘর ছিল অমলের। দীর্ঘদিন তিনি সেখানে সেলুন দিয়ে নরসুন্দরের কাজ করেছেন।
ছোট্ট ওই দোকানের আয় দিয়ে পরিবারের ভরণপোষণ চালাতে না পেরে ২০০৮ সালের দিকে আমতলীর সংবাদপত্র বিক্রেতা শফিকুল হক সোহেলের কাছে তিন বছরের চুক্তিতে দোকানটি ভাড়া দেন অমল। আমতলীর প্রভাবশালী একাধিক ব্যক্তিও সাক্ষী ছিলেন সে চুক্তি সম্পাদনের সময়।
পরে তিন বছরের চুক্তি শেষ হয়ে গেলেও হতদরিদ্র আমলের সে ঘর ফেরত দেননি আলমগীর নিউজ এজেন্সির স্বত্বাধিকারী শফিকুল হক সোহেল। উপরন্তু ভাড়া না দিয়ে নানা চক্রান্ত করে অমলের সে দোকানঘর নিজের নামে ডিসিআর করে নেওয়ার পাঁয়তারা চালান সোহেল। এ বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের দ্বারস্থ হয়েও কোনো সুরাহা পাননি অমল।
অনন্যোপায় হয়ে আজ মঙ্গলবার সকালে আমতলী শহরের সদর রোডে পরিবার-পরিজন নিয়ে আমরণ অনশনে বসেন অমল চন্দ্র শীল। এ খবর শুনে সেখানে ছুটে যান আমতলীর উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি জি এম দেলোয়ার, পৌর মেয়র মতিয়ার রহমানসহ স্থানীয় সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এ সময় তাঁরা অমলের ঘর ফিরিয়ে দিতে দখলদার সোহেলকে অনুরোধ করেন।
পরে মেয়র মতিয়ার রহমানের নিজস্ব শপিং কমপ্লেক্স আবদুল্লাহ মার্কেটে বিনা ভাড়ায় এক বছর দোকান দেওয়ার সুযোগ দিয়ে সোহেলকে অমলের ঘর ছেড়ে দিতে অনুরোধ জানান মেয়র। এ সময় সর্বস্তরের নেতৃবৃন্দের চাপে পিছু হটেন সোহেল।
এ বিষয়ে আমতলী পৌরসভার মেয়র মতিয়ার রহমান জানান, ‘সবার সহযোগিতায় হতদরিদ্র অমলের দোকানঘর ফিরিয়ে দিতে পেরে আমি আনন্দিত।’
ভুক্তভোগী অমল চন্দ্র শীল কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘সকলের সহযোগিতায় আমার দোকানঘর ফিরে পেয়েছি। এ জন্য আমি সকলের কাছে চির ঋণী।’