বিএনপি প্রার্থীর ছেলেসহ তিনজনের ওপর হামলা

মানিকগঞ্জে এক পরাজিত ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান প্রার্থীর ছেলেসহ তিনজনের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে।
গতকাল শনিবার রাতে উপজেলা পরিষদ মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।
দৌলতপুর উপজেলার চকমিরপুর ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিএনপি মনোনীত পরাজিত প্রার্থী আজিজুল হক মন্টুর ছেলে মো. সোহেল হোসেনসহ (২৯) তিনজনের ওপর এ হামলা করা হয়। আহত অন্য দুজন হলেন আজিজুল হক মন্টুর আত্মীয় চখরিচরণ গ্রামের রুবেল মিয়া (২৭) ও মো. বাবু মিয়া (২৫)। তিনজনকেই দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
আজিজুল হক মন্টু অভিযোগ করে বলেন, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত শফিকুল ইসলামের কর্মী-সমর্থক উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুল হাসান সুমন, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জুয়েল রানার নেতৃত্বে ২০-২৫ জন চাপাতি ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে গত রাতে উপজেলা মোড়ে এ হামলা চালায়।
বিএনপির এই নেতা জানান, তাঁর বড় ছেলের শ্যালক বাবু উপজেলা ছাত্রলীগের সহসাধারণ সম্পাদক এবং রুবেল ছাত্রলীগকর্মী। নির্বাচনে ছাত্রলীগের বেশির ভাগ নেতাকর্মী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী শফিকুল ইসলামের পক্ষে কাজ করেছেন। তবে আত্মীয়তার কারণে রুবেল কাজ করেছেন ধানের শীষ প্রতীকের পক্ষে। এ জন্য ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা ক্ষিপ্ত হয়ে নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণার সময় তাঁকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। গত ৩১ মার্চ নির্বাচনে শফিকুল জয়ী হওয়ার পর তাঁকে আরো বেশি হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিলেন তাঁরা।
সর্বশেষ গতকাল রাত ৯টার দিকে বাবুকে ফোন করে উপজেলা পরিষদ মোড়ে আসতে বলেন উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুল হাসান সুমন। বাবুর ভাই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর পক্ষে কাজ করায় তাঁকে মারধর করেন তাঁরা। এ সময় রুবেল ও সোহেল সেখানে গেলে চাপাতি ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা করেন ছাত্রলীগের ওই নেতাকর্মীরা। পরে স্থানীয় লোকজন আহত তিনজনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক আরিফুল ইসলাম জানান, রুবেলের মাথায় ১৩টি ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে সেলাই করা হয়েছে। অন্যদেরও মাথা ও শরীরের কয়েক স্থানে সেলাই করা হয়েছে। বিশেষ করে রুবেলকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হবে।
এ বিষয়ে দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল নিশাত জানান, রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ। এ ছাড়া চিকিৎসাধীন আহত তিনজনের সঙ্গেও কথা বলা হয়েছে। এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ করা হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে, হামলার অভিযোগ ওঠা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুল হাসান সুমন ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জুয়েল রানার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয়। তবে কলগুলো রিসিভ হয়নি।