মুখ ঢেকে নির্বাচনী মিছিল, কোমরে ‘অস্ত্র’!

ময়মনসিংহ সদর উপজেলার অষ্টাধর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। প্রার্থীদের অভিযোগ, মামলার পলাতক আসামি, ভাড়াটে খুনি, মুখোশধারী সন্ত্রাসী, অস্ত্রধারীদের নিয়ে চলছে গণসংযোগ। এ নিয়ে এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।
এ ছাড়া প্রতিনিয়ত প্রতিপক্ষ ও ভোটারদের হুমকি-ধমকির বিষয়টি তো রয়েছেই। প্রার্থীরা অভিযোগ করেছেন, এসব বিষয় প্রশাসনের নজরে আনলেও কেউ আমলে নিচ্ছেন না।
যদিও প্রশাসনের পক্ষ থেকে আজ ময়মনসিংহ জেলা শহরে প্রার্থী ও ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তাদের এক মতবিনিময় সভায় নির্বাচনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। প্রার্থীদের আশ্বস্ত করা হয়েছে, অনিয়মের ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেবে প্রসাশন।
ময়মনসিংহ সদর উপজেলার অষ্টাধর ইউনিয়নে আটজন প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থীও রয়েছেন।
আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ও অষ্টাধর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মোশাররফ হোসেন শাহীন অভিযোগ করেছেন, শহর থেকে লোক এনে, বিভিন্ন মামলার আসামি ও মুখোশধারী সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে মোটরসাইকেল মিছিল করেছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শফিকুল হক বাবলু।
বাবলু প্রচার চালাচ্ছেন, ভোট না পেলেও তিনি বিজয়ী হবেন। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলেও বাবলু মোটরসাইকেলে করে সন্ত্রাসী দিয়ে মিছিল করে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন। সেখানে একজনকে মুখোশ পরিহিত অবস্থায় দেখা গেছে। সেই মুখোশধারীর কোমড়ে তখন অস্ত্র ছিল বলেও দাবি করেন মোশাররফ হোসেন শাহীন।
একই অভিযোগ করেছেন ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সভাপতি ও চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী শামসুল হক মন্টু। তিনি বলেন, নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করা হচ্ছে। মোটরসাইকেলে মুখোশধারীরা মিছিল করছে এবং ভোটকেন্দ্র দখলের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তাতে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের মনে শঙ্কা ও ভয় কাজ করছে।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শফিকুল হক বাবলু। তিনি বলেন, গরমে ধুলাবালি বেশি উড়ে। তাই ধুলাবালি থেকে রক্ষার জন্যই মুখ কাপড় দিয়ে ঢেকে ওই ব্যক্তি মিছিল করেছেন।
অন্য সবাই তো খালি মুখে ছিলেন, শুধু একজনই কেন মুখ ঢেকে রেখেছিলেন- এমন প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি আওয়ামী লীগ প্রার্থী। তবে তিনি বলেন, তাঁর মিছিলে কেউ অস্ত্র নিয়ে আসেনি।
ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও বিদ্রোহী চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী রুহুল আমীন বলেন, অনেকেই আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন। তিনি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রশাসনের সহায়তা কামনা করেন।
বিএনপি মনোনীত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী তারেক হাসান মুক্তা বলেন, ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শন ও পেশিশক্তির মহড়া চলছে। তবে ভোটের মালিক জনগণ। শান্তিপূর্ণ ভোট এবং ভোট ছিনতাই ঠেকাতে প্রশাসনকে আরো কঠোর অবস্থান নিতে হবে।