ফেসবুকে প্রেম করে ব্যবসায়ী অপহরণ
ফেসবুকে নারীর মাধ্যমে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলা হয়। পরে নারায়ণগঞ্জে ডেকে নিয়ে বা বিভিন্ন জায়গা থেকে অপহরণ করে। এরপর মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারী চক্র। সর্বশেষ ঢাকার গুলশান এলাকা থেকে ব্যবসায়ী সিকান্দার কবিরকে এভাবেই ফাঁদে ফেলে টাকা আদায়ের করছিল তারা। বিধিবাম, র্যাব-১১-এর সদস্যরা গিয়ে হাজির হন ঘটনাস্থলে। গ্রেপ্তার করা হয় অপহরণকারী দলের এক সদস্যকে। সাংবাদিকদের কাছে তিনি অপহরণের কথা অকপটে স্বীকার করেছেন।
urgentPhoto
গতকাল সোমবার গুলশান থেকে অপহরণের ১০ ঘণ্টা পর সিকান্দার কবীরকে নারায়ণগঞ্জ থেকে উদ্ধার করেছে র্যাব-১১। আটক অপহরণকারীর নাম ইমরান।
নারায়ণগঞ্জ শহরের কালিরবাজারে র্যাব-১১-এর কোম্পানি কমান্ডার এএসপি শিবলী সাদিক জানান, সোমবার সকাল ১০টার দিকে ঢাকার গুলশান থেকে অপহৃত হন ব্যবসায়ী সিকান্দার কবীর। তাঁর স্ত্রী এ ব্যাপারে র্যাবের কাছে অভিযোগ করেন। এই অভিযোগের ভিত্তিতে মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে র্যাব রাত ১০টার দিকে নারায়ণগঞ্জ নগরীর পশ্চিম দেওভোগ এলাকায় একটি বিকাশের দোকান থেকে আটক করে ইমরানকে। মুক্তিপণসহ উদ্ধার করা হয় ব্যবসায়ী সিকান্দার কবীরকে।
র্যাব জানায়, অপহরণকারী ইমরান র্যাবের কাছে স্বীকার করেছেন তাঁরা মেয়ে দিয়ে ফেসবুকের মাধ্যমে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেন। পরে ফোন করিয়ে ব্যবসায়ী সিকান্দারকে ডেকে এনে অপহরণ করে মুক্তিপণ নিয়ে ছেড়ে দেয়। একই কায়দায় সিকান্দার কবীরকে অপহরণ করে পরিবারের কাছে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। পরে তারা বিকাশের মাধ্যমে মুক্তিপণের ৩২ হাজার টাকা সিকান্দারের পরিবারের কাছ থেকে আদায় করে। সিকান্দার এ মুহূর্তে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অপহরণকারী দলের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে র্যাব।
আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে অপহরণকারী ইমরানকে সাংবাদিকদের সামনে হাজির করা হয়। তিনি বলেন, ‘দুই-একটা কাজ করছি, পরকীয়ার ই কইরা মুক্তিদান বাবদ টাকা নিছিলাম। অপহরণটা মনে করেন বাসায় আইছে ওই লোক (সিকান্দার কবির)। ওই সময় র্যাব আইসা উদ্ধার করে। টাকাডা বিকাশের মাধ্যমে আদায় করি। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জের মেয়ে দিয়া ফেসবুকের মাধ্যমে অপহরণ কইরা আমরা টাকা দাবি করি।’ এ সময় কামরুল ও সুমি নামের দুজন এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে জানান ইমরান।
এএসপি শিবলী সাদিক বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে নারায়ণগঞ্জে অপহরণের ঘটনা ঘটে আসছে। অপরাধীরা ফেসবুক ও মোবাইল ফোনের মাধ্যমে মেয়েদের ইউজ করে এখানে ডেকে এনে বা বিভিন্ন জায়গা থেকে তারা অপহরণ করে এবং মুক্তিপণ আদায় করে। র্যাব বিষয়টি দীর্ঘ ধরে তদন্ত করছে। আজ আমরা মোবাইল ট্র্যাকিং ও অন্যান্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে অপহৃতকে উদ্ধার করি এবং আসামিকে গ্রেপ্তার করি, টাকা উদ্ধার করি। আসামি অকপটে সব স্বীকার করে। অপহরণকারী বেশির ভাগ সময় বিকাশের মাধ্যমে মুক্তিপণের টাকা দাবি করে আসছে।