জেসিআই বাংলাদেশের নতুন কমিটির যাত্রা শুরু
জুনিয়র চেম্বার ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নবনির্বাচিত কমিটির আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়েছে। গত শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর লা মেরিডিয়ান হোটেলে অনুষ্ঠিত হয় জুনিয়র চেম্বার ইন্টারন্যাশনাল (জেসিআই) বাংলাদেশের নবনির্বাচিত কমিটি অভিষেক অনুষ্ঠান। সদ্য বিদায়ী প্রেসিডেন্ট সারাহ কামাল ও নতুন প্রেসিডেন্ট নিয়াজ মোর্শেদ এলিটের মধ্যে চেইন হ্যান্ডওভারের আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু হয় নতুন কমিটির।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকার যুক্তরাজ্য হাইকমিশনের ডেপুটি হাইকমিশনার জাবেদ প্যাটেল, সুচিন্তা ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মোহাম্মাদ এ আরাফাত, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার শাহ আলী ফরহাদ এবং ফরচুন সুজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘দেশের মানুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ২০৪১ সালের আগেই বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে উঠবে বলে আশা করা যায়।’
তথ্যমন্ত্রী জেসিআই তরুণদের উদ্দেশে বলেন, ‘শুধু নিজের বা নিজের পরিবারের জন্যই নয়, স্বপ্ন দেখতে হবে সমগ্র দেশ ও দেশের মানুষের জন্য। তাহলেই দেশ তার কাঙ্ক্ষিত ঠিকানায় পৌঁছে যাবে।’
বাংলাদেশ খাদ্য উদ্বৃত্তের দেশ উল্লেখ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘২০০৮ সালের খাদ্যঘাটতির বাংলাদেশ আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে খাদ্য উদ্বৃত্তের দেশ। বঙ্গবন্ধু কন্যার সুদক্ষ নেতৃত্বে আমরা করোনা মোকাবিলা সক্ষমতায় দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম ও বিশ্বে ২০তম। দেশের এই অভূতপূর্ব অগ্রগতির ধারা অক্ষুন্ন রাখতে তারুণ্যের অমিত শক্তি সবসময়ই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
বিশেষ অতিথি যুক্তরাজ্য হাইকমিশনের ডেপুটি হাইকমিশনার জাবেদ প্যাটেল বলেন, ‘আমি জেসিআই বাংলাদেশকে গত এক বছরের সাফল্যের জন্য অভিনন্দন জানাই। ঐতিহাসিকভাবে, বাংলাদেশের তরুণরা তাদের সমাজের ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সর্বদা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। যুক্তরাজ্য তার তরুণ জনগোষ্ঠীর নেতৃত্বের দক্ষতা বিকাশ, ন্যায়সঙ্গত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং টেকসই সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, মঙ্গল ও সমৃদ্ধি প্রদানের মাধ্যমে বাংলাদেশকে সমর্থন অব্যাহত রাখবে।’
প্রেসিডেন্ট নিয়াজ মোর্শেদ এলিট স্বাগত বক্তব্যে বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের একটি মাইলফলকে দাঁড়িয়ে আছি; এই সুন্দর দেশে জন্মগ্রহণকারী আমাদের সবার জন্য এই বছরটি একটি মাইলফলক। বাংলাদেশ এ বছর তার পঞ্চাশতম জন্মবার্ষিকী পালন করছে আর এরই মধ্য আমরা প্রায় সমস্ত বিশ্ব সূচকে ক্রমবর্ধমান উন্নয়নের ধারায়। আমাদের প্রতিষ্ঠাতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই মহান জাতির ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন।’
জেসিআই বাংলাদেশের সব সদস্য এবং সুযোগ্য নেতৃত্বের এর মাধ্যমে নিয়াজ মোর্শেদ উন্নয়নের ধারা সমুন্নত রাখার প্রতি আহ্বান জানান।
সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মাদ এ আরাফাত আধুনিক পরিবর্তিত পৃথিবীতে ডিজিটাল স্পেসে ইতিবাচক অবস্থান, শান্তি, সহমর্মিতা, বিভিন্ন গোষ্ঠীর মাঝে সহাবস্থান মূলক সমাজ গঠনে যুব নেতৃত্বকে উৎসাহ দেন। উগ্রবাদ রুখে দিয়ে একটি প্রগতিশীল আর আধুনিক উন্নত রাষ্ট্র গঠনে জেসিআইয়ের মতো প্রতিষ্ঠানের অবদানের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার শাহ আলী ফারহাদ বলেন, ‘তরুণদের উন্নয়নে সবচেয়ে বড় অংশীদার ও মিত্র আওয়ামী লীগ সরকার ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই। ২০৪১ সালের ভিশন বাস্তবায়নে তরুণদেরই এগিয়ে আসতে হবে।’
ফরচুন সুজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, ‘ব্যবসা বাণিজ্য আর অর্থনীতির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ এখন এক বৈশ্বিক উদাহরণ। দেশের জিডিপি আর বৈদেশিক বিনিয়োগ তারই প্রমাণ।’ তিনি জানান, জেসিআইয়ের উদ্যোগে সামিল হতে পেরে তিনি আনন্দিত এবং সব সময় তরুণ ও যুবাদের যেকোনো উদ্যোগে পাশে থাকবেন বলেও আশ্বস্ত করেন।
অভিষেক অনুষ্ঠান আয়োজক কমিটির পক্ষে ভাইস প্রেসিডেন্ট ইমরান কাদির বলেন, ‘জেসিআই ২০২১ জাতীয় পরিচালনা পর্ষদ একটি সাম্প্রতিক গণতান্ত্রিক নির্বাচন থেকে নতুনভাবে আত্মপ্রকাশ করেছে এবং এই সংগঠনের প্রতি আমাদের সদস্যের বিশ্বাস, অনুভূতি এবং স্বপ্নের যথাযথ প্রতিচ্ছবি এই কমিটি। আমরা আমাদের কৌশলগত, নৈতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক সব ধরনের সহায়তা দিয়ে লোকাল চ্যাপ্টারের স্বপ্নের প্রকল্পগুলো সমুন্নত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
অনুষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে ছিল ফরচুন সুজ, ভাসাভি ফ্যাশনস, ডি কোর্ডিনেটর, বিএনও লুব্রিক্যান্ট, অর্চারড গ্রুপ, এরিস্টক্র্যাট ইভেন্ট, মিনহাজ ফুড, ফার্মরুটস এবং স্পেকট্রাম, কনটেন্ট ম্যান ও লা মেরিডিয়ান।
ভাসাভি ফ্যাশনস লিমিটেডের সৌজন্যে স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠিত হয় ফ্যাশন শো। নৈশভোজ পরবর্তী পর্যায়ে জাতীয় পর্যায়ের জনপ্রিয় শিল্পী পড়শির সংগীতে মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়।