ডলারের দাম বাড়ায় উদ্বিগ্ন কেন্দ্রীয় ব্যাংক
হঠাৎ করে মার্কিন ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। একই সঙ্গে আন্তব্যাংক লেনদেনের সময় প্রতি ডলারের দাম সর্বোচ্চ দুই টাকার বেশি না বাড়ানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুষ্ঠিত ব্যাংকার্স বৈঠকে এ বিষয়টি উঠে আসে।
আমদানির তুলনায় রপ্তানিতে কম প্রবৃদ্ধি ও রেমিট্যান্সে নেতিবাচক প্রবাহের কারণে বেশ কিছুদিন ধরে টাকার বিপরীতে ডলারের দাম সামান্য বাড়ছে। রমজান সামনে রেখে ভোগ্য পণ্যের আমদানি দায় পরিশোধের চাপ বাড়ায় সম্প্রতি হঠাৎ করে বেড়ে প্রতি ডলারের দাম উঠেছে ৮৪ দশমিক ৬০ টাকায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী বলেন, ‘আজকে আমরা বৈঠকে সাম্প্রতিক সময়ে ডলারের দর বৃদ্ধির বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছি। চাহিদার কারণে স্বাভাবিকভাবে দর বাড়লে তা নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কিছু করার নেই।’
এস কে সুর চৌধুরী বলেন, আমদানির কারণে বাড়তি চাহিদা মেটাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাজারে ডলার সরবরাহ করতে প্রস্তুত রয়েছে। এরই মধ্যে বাজারে কিছু ডলার বিক্রি করা হয়েছে। প্রয়োজন হলে আরো বিক্রি করা হবে। তিনি বলেন, উন্মুক্ত বিনিময় হার ব্যবস্থায় বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার বা কোনো বৈদেশিক মুদ্রার দাম ঠিক করে দিতে পারে না। ডলারের দাম স্বাভাবিক রাখতে সরাসরি হস্তক্ষেপ না করলেও বাংলাদেশ ব্যাংক মাঝেমধ্যে বিভিন্ন উপায়ে নৈতিক চাপ সৃষ্টি করে।
ডেপুটি গভর্নর বলেন, ‘বৈঠকে আমরা সব ব্যাংকে বলে দিয়েছি। চেক জালিয়াতির বিষয়ে তাঁদের কাছে কোনো পরামর্শ থাকলে তা যেন বাংলাদেশ ব্যাংকে জানায়।’
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহাম্মদ রাজী হাসান, এস কে সুর চৌধুরী ও এস এম মনিরুজ্জামান, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহী ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে (জুলাই-মার্চ) প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাঠানো ৯১৯ কোটি ডলার আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ১৭ শতাংশ কম। একই সময়ে রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩ দশমিক ৯৭ শতাংশ। গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আমদানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১০ শতাংশের বেশি। রমজান সামনে রেখে বিভিন্ন ভোগ্য পণ্য আমদানিতে প্রচুর ডলার খরচ হয়েছে। এসব কারণে হঠাৎ করে ডলারের দাম বাড়ছে।
জানা যায়, আন্তব্যাংকের মুদ্রাবাজারে গতকাল বুধবার প্রতি ডলার ৮০ টাকা ৩ পয়সা দরে বিক্রি হয়েছে। যা চলতি মাসের শুরুর দিকে ছিল ৭৯ টাকা ৬৮ পয়সা। অন্যদিকে মার্চ মাসের একই দিন প্রতি ডলার বিক্রি হয় ৭৯ টাকা ৩০ পয়সায়।