ঈদ ঘিরে ডিপ ফ্রিজের বিক্রি বেড়েছে
লোভনীয় প্রস্তাব ও কিস্তির ভিত্তিতে দাম পরিশোধের সুযোগ থাকায় ঈদুল আজহা ঘিরে দেশজুড়ে বিভিন্ন কোম্পানির ফ্রিজ বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ছড়িয়েছে। তবে মাঝারি আকারের ও ডিপ ফ্রিজগুলোর বিক্রি হয়েছে সবচেয়ে বেশি।
কোম্পানিগুলোর ব্যবস্থাপক ও বিক্রয়কর্মীরা মনে করছেন, সরকারি চাকরজীবীদের বেতন বাড়া ও ঈদের বোনাস পাওয়ায় বাজারে টাকার প্রবাহ বেড়েছে। এর প্রভাব পশুর হাট, ইলেকট্রনিক ও ভোগ্যপণ্যের বাজারে পড়ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশের বিভিন্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে ইলেকট্রনিক পণ্য বিক্রির জন্য লোভনীয় প্রস্তাব ও দাম নির্ধারণে কোম্পানিগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা বাড়ে। বাজার ধরতে নতুন নতুন উপায় খোঁজে প্রতিষ্ঠানগুলো। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে দেশি-বিদেশি ব্র্যান্ডের পণ্য উপস্থান হয় আউটলেটগুলোতে।
রাজধানীর বিভিন্ন কোম্পানির আউটলেটগুলো ঘুরে দেখা গেছে, এবার ঈদুল আজহার বাজার ধরতে কোম্পানিগুলো স্ক্রাচ কার্ডে নগদ ছাড়, ফ্রি হোম ডেলিভারি, বাড়তি সার্ভিস, নিশ্চিত পুরস্কার, ভ্রমণ টিকেট, বিভিন্ন ইলেকট্রনিক পণ্য উপহারসহ বিভিন্ন রকমের প্রস্তাব করছে। এ ছাড়া পণ্য বিক্রি বাড়াতে বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানই কিস্তি সুবিধা দিয়েছে।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার আউটলেটগুলোতে দেশি-বিদেশি ব্র্যান্ডের ফ্রিজের মধ্যে ওয়ালটন, সনি র্যাংকস, ট্রান্সটেক, এসকোয়্যার, জেনারেল, ভিশন, শার্প, প্যানাসনিক, ইলেকট্রোমার্ট, যমুনা, মিতসুবিশি, সিঙ্গার, স্যামসাং ইত্যাদি ব্র্যান্ডের ফ্রিজ রয়েছে। ব্র্যান্ড ও মানভেদে এসব ফ্রিজের দাম ২০ হাজার থেকে এক লাখ ৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত। এর মধ্যে ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত দামের পণ্যে ক্রেতাদের আগ্রহ বেশি। আর এ মৌসুমে ডিপ ফ্রিজের বিক্রি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি হয়েছে।
বাংলামোটরের সিঙ্গারের শো-রুমের ব্যবস্থাপক রফিকুল ইসলাম বলেন, সারা বছরের মোট বিক্রির প্রায় অর্ধেকই ঈদুল আজহার আগের ১৫ দিনে হয়। গতবারের চেয়ে এবার বিক্রির চাপ বেশি। এবার ফ্রিজ বিক্রি লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে। কিছু মডেলের মজুদ শেষ হওয়ায় ক্রেতারা ফিরে গেছে।
যমুনা ইলেকট্রনিকসের বিক্রয়কর্মী কাজী শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘এবার বাজার নিয়ে আশাবাদী ছিলাম। বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা এরই মধ্যে পূরণ হয়েছে।’
ওয়ালটনের উৎপাদন বিভাগের পরিচালক উদয় হাকিম বলেন, ‘ফ্রিজ বিক্রির প্রধান মৌসুম কোরবানির ঈদ। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী সারা দেশে এবার ফ্রিজের ক্ষেত্রে আশানুরূপ সাড়া পাওয়া গেছে। ঈদ সামনে রেখে ওয়াল্টন ফ্রিজের বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ছিল সাড়ে চার লাখ। এর বাজার মূল্য ৮০০ কোটি টাকার বেশি। গত ঈদের চেয়ে এবার ৪০ শতাংশের বেশি বিক্রি হয়েছে। গত বছর ফ্রিজ বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ছিল আড়াই লাখ।’
বাংলাদেশ রেফ্রিজারেটর্স ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের হিসাব মতে, সারা বছর দেশে ১২ লাখের মতো ফ্রিজ বিক্রি হয়। ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে মোট চাহিদার ৩০-৩২ শতাংশ ফ্রিজ বিক্রি হয়।