সমাবর্তনকে ঘিরে নতুন রূপে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) চতুর্থ সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হবে ৭ জানুয়ারি। রাস্তা সংস্কার, প্যান্ডেল তৈরি, সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন, ফোয়ারা নির্মাণসহ জমকালোভাবে নতুন রূপে সাজানো হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়কে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ সমাবর্তন সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে জমকালো আয়োজনের ব্যবস্থা করছে কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনের জন্য ফুটবল খেলার মাঠে তৈরি করা হচ্ছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অত্যাধুনিক প্যান্ডেল। প্রায় ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ প্যান্ডেলে ১৫০টি সোফা, তিন হাজার কুশন চেয়ার ও সাত হাজার প্লাস্টিক চেয়ার, ৪৫০টি লাইট এবং ২৫০টি ফ্যান থাকবে। প্যান্ডেলের ৭৩ হাজার ৫০০ বর্গফিট স্থানে লাল কার্পেট বিছানো থাকবে। একই সঙ্গে প্যান্ডেলের পাশেই থাকবে বিশ্রাম কক্ষ ও টয়লেট।
এ ছাড়া সমাবর্তনকে ঘিরে ক্যাম্পাসের রাস্তা সংস্কারকাজ সম্পন্ন হয়েছে। একই সঙ্গে বিভিন্ন ভবনে পড়েছে রং তুলির আচড়। ক্যাম্পাসের ভেতরে ও বাইরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে স্থাপন করা হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা। নিরাপত্তা রক্ষার্থে বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিবি, গোয়েন্দা বাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কাজ করছেন বলে জানা গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সমাবর্তনে সভাপতিত্ব করবেন। সমাবর্তনের দিন রাষ্ট্রপতি সততা ফোয়ারা, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, শেখ রাসেল হল এবং শেখ হাসিনা হলের দ্বিতীয় পর্বের উদ্বোধন করবেন।
ক্যাম্পাসে প্রবেশের পর হাতের বাম দিকে নির্মাণ করা হচ্ছে দৃষ্টি-নন্দন ‘সততা ফোয়ারা’। এটির স্থপতি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী আলিমুজ্জামান টুটুল। ২০ ফুট ওপর থেকে ফোয়ারাটিতে তিন স্তরে ১১০টি নজেল দিয়ে পানি ওঠানামা করবে। এর চারপাশে চলাচলের জন্য ১০ ফুট রাস্তা রয়েছে। ফোয়ারাটি নির্মাণ করতে প্রায় ১৫ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী এম হানিফ ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যৌথভাবে এটির নির্মাণ ব্যয় বহন করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকের পাশে প্রায় ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে তৈরি করা হচ্ছে ৩১ ফুট উচ্চতা সম্পন্ন ‘মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব’ নামে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি ভাস্কর্য। ভাস্কর্যটি নকশা করেছেন ইবির ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী আলিমুজ্জামান টুটুল।
এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে শেখ রাসেল হলের প্রথম পর্ব। পঞ্চম তলা ভবনবিশিষ্ট হলটির প্রথম পর্বে ২৫০ আসন রয়েছে। এ ছাড়া ছাত্রীদের জন্য নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে শেখ হাসিনা হলের দ্বিতীয় পর্ব। পাঁচতলা ভবন বিশিষ্ট হলটিতে ২৫০ আসন রয়েছে। ১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে শেখ রাসেল হল ও আট কোটি টাকা ব্যয়ে শেখ হাসিনা হলের দ্বিতীয় পর্ব নির্মাণ করা হয়েছে। আবাসিক হল দুটির কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে।
প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান বলেন, ‘মহামান্য রাষ্ট্রপতির আগমনে উৎসব মুখর পরিবেশ বজায় রাখতে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।’
উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-উর-রশিদ আসকারী বলেন, ‘সমাবর্তন সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সমাবর্তন অনুষ্ঠান আয়োজনের কাজ প্রায় শেষের দিকে। নির্ধারিত সময়ে সব কাজ সম্পন্ন হবে বলে আশা করছি।’