শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) চার শিক্ষার্থীকে র‌্যাগ করা, ভর্তি জালিয়াতি ও সহপাঠীকে ছুরিকাঘাতের জন্য আজীবন বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ ছাড়া ১৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

আজ বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ে শাবিপ্রবির ২০৭তম সিন্ডিকেট সভায় ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলাকমিটির সুপারিশক্রমে ওই সিদ্ধান্ত নেয় সিন্ডিকেটসভা।   

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সবধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে  আমাদের অবস্থান স্পষ্ট। প্রশাসন র‌্যাগিংয়ের নামে কোনো ধরনের নির্যাতনকে প্রশ্রয় দেবে না।’

ভিসি ফরিদ উদ্দিন আরো জানান, তদন্ত কমিটি ‘র‌্যাগিং’-এর নামে নির্যাতনের প্রমাণ পেয়েছে। তার ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘২০১৬ সালের ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির ঘটনায় ‘ফুড অ্যান্ড টি টেকনোলজি’ বিভাগের ২০১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থী আল আমিন ও একই বছর সহপাঠীকে ছুরিকাঘাত ও হত্যার চেষ্টায় কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১২-১৩ সেশনের মুহাম্মদ রাসেল পারভেজকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবন বহিষ্কার করেছে সিন্ডিকেট। আমরা চাইনা কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত করুক।’

এ ছাড়া গত ১৫ ফেব্রুয়ারি সিভিল অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের ছয় নবীন শিক্ষার্থীকে অর্ধনগ্ন করে ‘র‌্যাগিং’-এর পাশাপাশি রাতভর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেন একই বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় ২০ ফেব্রুয়ারি গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন মেয়াদে ২১ জনকে বহিষ্কারের সুপারিশ করে শৃঙ্খলা কমিটি।

এরমধ্যে আজীবন বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা হলেন, আশিক আহমেদ হিমেল, হামিদুর রহমান রঙ্গন।

এ ছাড়া মাহমুদুল হাসান ও শাহরিয়ার জামানকে দুই বছরের জন্য বহিষ্কার ও ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা, ইশতিয়াক আহমেদকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা, বাবলু মারমা, অদ্রী দাস, আবু রেদুয়ান খান, ওমর আলম সরকার, রনি সরকারকে ছয় হাজার টাকা জরিমানা ও সতর্কীকরণ, আহমেদ হাসিব, দেবাশীষ বসু, মাহবুব এ ইব্রাহিম, মো. শহীদুল আলম, মো. আল আমিন, আশিকুল এনাম, দীপ্ত মৈত্র তরু, সজীবুর রহমান, রায়সুল বারী সিফাতকে তিন হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। অন্যদিকে নাজমুস সাকিব ফারদিন, শরীফুল ইসলামকে সতর্কীকরণ করে সিন্ডিকেট। এদের মধ্যে রনি সরকার পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের এবং বাকি সবাই সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষ প্রথম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী।